পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় w কিন্তু তুমি তাদের দলের নাও রাজু তা জানত বলেই সে তার নতুন-মায়ের দুর্ভাগ্যের কাহিনী তোমার কাছে খুলে জানিয়েছিল। তারক অনেকক্ষণ নতমুখে চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। পরে মুখ তুলিয়া কহিল-রাখাল আমাকে বলেছিল মা একদিন, সংসারে হাজারের মধ্যে ন’শো নিরেনবােবই জন সাধারণ মেয়ে, ক্কচিৎ কখনও একটি অসাধারণ মেয়ে দেখতে পাওয়া যায়।--নতুন-মা সেই ন’শো নিরানব্বইয়ে পর স্কচিৎ-মেলা একটি মেয়ে । একে কেউ ইচ্ছা করলেও অবজ্ঞা বা অবহেলা করতে পারেন । সে সত্যি কথাই বলেছিল । সবিতা কথা কহিলেননা। অন্যমনস্কে অন্যদিকে চাহিয়া রহিলেন। তারক একটু নড়িয়া চড়িয়া বসিয়া কণ্ঠস্বরে অনেকখানি আবেগ আনিয়া বলিতে লাগিল-শিশুবয়সে মাকে হারিয়েচি জ্ঞান হবার আগেই, চিনতাম কেবলমাত্র বাবাকে । বাবাই আমাকে নিজহাতে মানুষ করেছিলেন, বড় করেছিলেন । সেই বাবা যখন আত্মসুখলোতে এনে দিলেন মাতৃহারা হতভাগ্য সন্তানকে এক বিমাতা, সেই দিনই দুঃখে৷ অভিমানে ঘূণায় চলে এসেছিলাম দেশত্যাগী হয়ে। বাপের মুখ আর দেখিনি, দেশেরও নয়। আপনাকে পেয়ে মা, জীবনে নতুন করে পেলাম পিতৃমাতৃ স্নেহের আস্বাদ । আমার কাছে আপনি “মা” ছাড়া অন্য আর কিছুই নয়। আপনার জীবনে যে-ঝড়, যে-আঘাত, যে-গুরুতর পরীক্ষাই এসে থাকুনা, আপনার হৃদয়ের অপরিমেয় মাতৃস্নেহকে তা বিন্দুমাত্ৰ শোষণ করতে পারেনি। সন্তানের পক্ষে এইটেই সবচেয়ে दएछ °i&झ| } সবিতা বলিলেন—তোমার বাবা এখনও জীবিত ?—তবে যে তুমি একদিন আমাকে বলেছিলে তুমি পিতৃমাতৃহীন ? তারক হাসিয়া কহিলা-ঠিকই বলেছি মা -আমার জন্মদাতা