পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় br8 কৰ্ম্মময় জীবনের এই রকম বিরাট সার্থকতার চেয়ে আর অন্য কি কাম্য থাকতে পারে বলুন ? সাবিত হাসিলেন, জবাব দিলেননা। তারকের মুখে পুরুষমানুষের জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও উচ্চ আদর্শ সম্বন্ধে এ পৰ্য্যন্ত তিনি অনেক বড় বড় কথা ও বৃহত্তর কল্পনাই শুনিয়া আসিতেছিলেন। কিন্তু তাহার নিজের ব্যক্তিগত জীবনের আশা আকাঙ্ক্ষা সার্থকতার লক্ষ্য কোন পথে, তাঙ্গা সে কোনওদিন স্পষ্ট করিয়া নির্দেশ করিতে পারে নাই বা করে নাই । সবিতা তারকের জীবনের প্রধান লক্ষ্য এবং আশা আকাজক্ষার স্বরূপের ঈষৎ আভাস এইবার যেন দেখিতে পাইলেন। তঁহার চিন্তাধারা কেমন এক অনির্দিষ্ট শূন্যতার মধ্যে হরাইন্না গেল । শিবুর মা আসিয়া ডাকিল-মা, বেলা হয়ে যাচ্চে, রান্না চড়াবেন চলুন। তারক বলিল-অনেকদিনই তো মায়ের হাতের অমৃত প্ৰসাদ পেলাম। এইবার রাধুনীটাকে হাঁড়ি ধরতে অনুমতি দিন। এই দারুণ গরমে আগুন-তাতে আপনার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়বে।-- সবিতা হাসিয়া বলিলেন- আগুন-তাতে রান্না করলে বাঙালী মেয়েদের স্বাস্থ্য ভাঙেনা তারক, উন্নতি হয় । -সে সাধারণ বাঙালী মেয়েদের হতে পারে মা, আপনি তাদের দলে ন'ন আমি জানি । --তুমি কিছু জানোনা বাছা । --না মা, আমি শুনবোন। কলকাতার বাসায় আপনার রাঁধুনী বামুন ছিল দেখেচি। এখানে কেন আপনি রাঁধুনীর হাতে খাবেননা বলুনতো ? রাধুনীর হাতে খেতে প্রবৃত্তি হয়না এটা আপনার বাজে-ওজর। আসল কথা, নিজে পরিশ্রম করতে চান। --তাইই যদি হয় তারক, তাতে আপত্তি কেন বাবা ?