পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় SS O জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলো। বললে কাকাবাবু আমাকে জানেন, আমার সেবা গ্ৰহণ করতে তিনি আপত্তি করবেননা । ব্ৰজবাবু ক্লান্তিভরে বালিশে মাথা এলাইয়া বলিলেন-কারুরই সেবা নেবার দরকার হবেনা রাজু, আমার রেণুমা যতক্ষণ আছে। তবে সারদ-ম এসেছেন, ভালই করেছেন, আমার রেণুকে একটু উনি দেখাশুনা করতে পারবেন। ওকে যত্ন করবার কেউ নেই। সংসারের কাজ, ঠাকুরসেবা তার উপরে রোগীর সেবার চাপে দিনে রাত্রে একদণ্ড ওর ছুটি নেই। রাখাল বলিল-নতুন-মাকে আপনার অসুখের খবর দেব কি কাকাবাবু? ব্ৰজবাবু ত্ৰস্তম্বরে বলিয়া উঠিলেন-না, না,-তোমরা কি পাগল হয়েছে ? অমান কাজও কোরন । আমার অসুখ যদি তিনি শোনেন, তারপরে র্তাকে আর কোন কিছুতেই কোথাও আটকে রাখা যাবেন । সেই দণ্ডেই এখানে চলে আসবেন । রাখাল কথা কহিলন । , মাথায় রক্তের চাপ অত্যধিক বৃদ্ধির ফলে ব্ৰজবাবুর বাম অঙ্গে পক্ষাঘাতের লক্ষণ সুস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। প্ৰাণহানির আশঙ্কা বৰ্ত্তমান । গ্রামের ডাক্তার বলিতেছেন, এ রকম সঙ্কটাপন্ন রোগী নিজের হাতে রাখিতে তিনি ভরসা করেননা। উপযুক্ত ঔষধ পথ্য ইনজেকশন প্রভৃতি গ্রামে পাওয়া যায়না । এমনকি রক্তের চাপ পরিমাপের উৎকৃষ্ট যন্ত্রেরও এখানে অভাব । কলিকাতায় লইয়া গিয়া চিকিৎসা করাইলে উপকার হইতে পারে। কিন্তু এখন এই অবস্থায় রোগীকে নাড়াচাড়া করা সম্ভবপর নয়। হাট অত্যন্ত দুর্বল, নাড়ীর গতি অতি দ্রুত । সুতরাং, কলিকাতা হইতে বিচক্ষণ কোনো চিকিৎসক লইয়া আসা সম্ভব হইলে সত্বর তাহার ব্যবস্থা করা উচিত ।