পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় No r o রাখাল একবার থামিয়া একটি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিল। তারপরে আবার বলিতে লাগিল, স্বামীর অন্ত বড়ো দুঃসময়ে স্ত্রী নিজের ভাইয়ের সঙ্গে একজোট হয়ে আপনার আর্থিক ভালমন্দের দিকটাই কেবলমাত্র বিবেচনা করলে, স্বামীর পানে তাকালেওনা। তুই যদি সেদিন তঁকে অমন করে ভরসা দিয়ে না বলতিস রেণু, “তোমাকে এক ফেলে রেখে আমি কখনো কোথাও যাবনা বাবা—” তা’হলে কাকাবাবু সংসারে দাড়াতেন। কাকে অবলম্বন করে ? রেণু অত্যন্ত মৃদুকণ্ঠে বলিল, কিন্তু রাজুদা, আমি তো বাবাকে সাস্তুনা বা সাহস দিতে ওকথা বলিনি। আমি যে সত্যি কথাই বলোচি । রেণুর কথা বলার ভঙ্গীতে রাখাল মনে মনে প্ৰমাদ গণিলেও মুখে হাসি টানিয়া আনিয়া বলিল,-সত্যি কথা নয় তো কি তুই মিথ্যে কথা বলেছিস বলছি আমি ? কিন্তু কি-জনিস বোন, সংসারে বেশির ভাগ সত্যই সাময়িক সত্য। চিরকালের সত্য বলে যদি কিছু থাকে তা” সংসারের বাইরের বস্তু। তুমি সেদিনকার সেই মুখের কথাটিকে রক্ষা করবার জন্য আজ যদি বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠে, জেনো, তার ফলে হয়তো তোমাদের জীবনে অকল্যাণই দেখা দেবে ! যা” কল্যাণ বহন করে আনে, তাকেই বলে সত্য । অশুভকরী যা, তা”। সত্য নয় । সেদিন তোমার মুখের যে-কথাটি কাকাবাবুকে সবচেয়ে সান্তুনা ও শান্তি দিয়েছিল,”—আজি সেই কথাটিকেই রক্ষা করবার জন্য তুমি যদি জিদ ধরে বোসে, তাহলে জেনো সেই অবাঞ্ছিত ব্যাপারই কাকাবাবুর সবচেয়ে দুঃখ দুৰ্ভাবনার হেতু হবে। এমনকি হয়তো সেটা তঁর মৃত্যুর কারণ পৰ্য্যন্ত হতে পারে। একটা কথা ভুলোনা রেণু যে-উগ্ৰবিষ, ধাতছাড়া রোগীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে জীবনদান করে, সেই বিষ পান করেই আবার সুস্থ মানুষ আত্মহত্যা করে। স্থান কাল ও অবস্থা