পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܦܐ؟ বৎসর ঘুরিয়া নূতন বৎসর আসিয়াছিল ; তাহাও আবার শেষ হইতে চলিল। সংসারের অবস্থা পরিবৰ্ত্তিত হইয়াছে অনেক । বিমলবাবু শেষবার সিঙ্গাপুরে গিয়া প্ৰায় দেড় বৎসর আর কলিকাতায় ফিরেন নাই । এই বছর-দুইয়ের মধ্যে রাখালকে প্ৰায় বার সাতেক ছুটিতে হইয়াছে বৃন্দাবনে। ইছাতে তাহার নিজের কাজ-কৰ্ম্মের ক্ষতি হইয়াছে যথেষ্ট । দিনের দিন সে ঋণ জালে জড়াইয়া পড়িতেছে ; অথচ উপায় কিছু নাই । রেণুদের আর্থিক সাহায্য করিবার জন্য সবিতা নানা উপায়ে বহু চেষ্টাই করিয়াছিলেন, সক্ষম হন নাই। গ্ৰায় সওয়া লক্ষ টাকা মূল্যের যে-সম্পত্ত্বি মাত্র একষট্টি হাজার টাকায় রমণীবাবুর সাহায্যে তিনি নিজের নামে খরিদ করিয়াছিলেন, তাহা রেণুরই উদ্দেশে। ঐ সম্পত্তি খরিদ কালে, নয়। হাজার টাকা রমণীবাবুর নিকট হইতে সবিতা গ্ৰহণ করিয়াছিলেন। এটি সর্তে যে, সম্পত্তিরই আয় হইতে উক্ত টাকা পরিশোধ করা হইৰে । উচ্চাeারের সুন্দ সমেত নয়। হাজার টাকা রমণীবাবুকে, সম্পত্তির আয় হইতে একযোগে পরিশোধ করাও হইয়া গিয়াছে । কিন্তু যাহার জন্য এত আয়োজন, সে-ই যখন সম্পত্তি স্পর্শ করিলােনা এবং ভবিস্তুতেও কোনদিন যে সম্পর্শ করিবে: এরূপ আশাও রহিলনা, তখন সবিতা একেবারেই ভাঙিবা পড়িলেন । তিনি নিজের সমস্ত অলঙ্কার, ব্ৰজবাবুর শিল-মোহর করা সেই গহনার বাষ্ম সমেত ব্যাঙ্কে গচ্ছিণ্ঠ রাখিয়াছেন রেণুৱাই নামে। কিন্তু, আকাশ-কুসুম রচনার নুশল্প সমৰ্ত্তই যে তঁাহার বৃথা হইতে চলিয়াছে !