পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় } সহরেই থান চারেক বাড়ী আছে। এ-পাড়া ও-পাড়া বললেই হয়, যখন ইচ্ছে মেয়ে-জামাইকে দেখতে পাওয়া যাবে। মনে হয়তো সকল দিকেই ভালো হলো । একটু থামিয়া বলিলেন, আমাকে তো জানোই নতুন-বেী, সাধ্যি ছিলনা নিজে এমন পাত্র খুজে বার করি। সবই গোবিন্দর রূপা ! এই বলিয়া তিনি ডানহাতটা কপালে ঠেকাইলেন। কন্যার সুখ-সৌভাগ্যের সুনিশ্চিত পরিণাম কল্পনায় উপলব্ধি করিয়া তঁহার সমস্ত মুখ স্নিগ্ধ প্ৰসন্নতায় উজ্জল হইয়া উঠিল। সকলেই চুপ করিয়া রছিলেন, একটা তিক্ত ও একান্ত অপ্রীতিকর বিরুদ্ধ প্ৰস্তাবে এই মায়া-জাল তঁহারই চক্ষের সম্মুখে ছিন্ন ভিন্ন করিয়া দিতে কাহারও প্ৰবৃত্তি ক্ৰুইলন । ব্ৰজবাবু বলিলেন, আমাদের রাখাল-রাজকে তো আর চিঠিতে নিমন্ত্রণ করা যায়না, ওকে নিজে গিয়ে ধরে আনতে হবে। ও ছাড়া আমার করবে: কৰ্ম্মাবেই বা কে ? কাল রাত্রে ফিরে গিয়ে রেণুর মুখে যখন খবর পেলাম রাজু এসেছিলো, কিন্তু দেখা হয়নি,~—তার বিশেষ প্রয়োজন, কাল সন্ধ্যায় আবার আসবে।--তখনি স্থির কেরলাম। এ সুযোগ আর নষ্ট হতে দিলে চলবেনী-যেমন কোরে হােক খুজে-পেতে তার বাসায় গিয়ে আমাকে ঐ ত্রুটি সংশোধন করতেই হবে। তাই দুপুর বেলায় আজ বেরিয়ে পড়লাম। কিন্তু, কার মুখ দেখে বেরিয়েছিলাম মনে নেই, আমার এক-কাজে কেবল দু-কাজ নয়, আমার সকল কাজ আজ সম্পূর্ণ হলো । স্পষ্ট বুঝা গেল তাহার ভাগ্য-বিড়ম্বিত একমাত্ৰ কন্যার বিবাহ ব্যাপারটিকে লক্ষ্য করিয়াই তিনি এ কথা উচ্চারণ করিয়াছেন। . মেয়েটা যেন তাহার অপরিজ্ঞাত জীবন-যাত্রার পূৰ্ব্বক্ষণে জননীর অপ্রত্যাশিত সুপ্টিক্কাদ র্দাভ করিল।