পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় (፩&ö নতুন-মা সম্মত হইয়া বলিলেন, তাই করে বাবা, গাড়ী আমার দাড়িয়েই আছে তুমি নিয়ে যাও। র্তাহার আদেশে একজন দাসী সঙ্গে গিয়া পৌছাইয়া দিতে রাজি হইল, এবং নতুন-মা রাখালের হাতে কতকগুলা টাকা গুজিয়া দিলেন । সন্ধ্যা শেষ হইয়াছে, আসন্ন রাত্রির প্রথম অন্ধকারে রাখাল আৰ্দ্ধসচেতন এই অপরিচিত বাধুটিকে জোর করিয়া গাড়ীতে তুলিয়া হাঁসপাতালের উদ্দেশে যাত্ৰা করিল। পথের মধ্যে উজ্জল গ্যাসের আলোকে এই মরণপথ-যাত্রী নারীর মুখের চেহারা তাহার মাঝে মাঝে চোখে পড়িয়া মনে হইতে লাগিল যেন ঠিক এমনটি সে আর কখনো দেখে নাই। তাঙ্গার জীবনে মেয়েদের সে অনেক দেখিয়াছে । নানা বয়সের, নানা অধস্তার, নানা চেহারার । একহারা, দোহারা, তেহরা, চরহার!-- ঋ্যাংরা-কাঠির ন্যায়,-ঢ্যাঙ, বেঁটে,-কালো, শাদী, হলুদে পাশুটে,— ঢুল-বালা, চুল-ওঠা,-পাশ-করা, ফেল-করা,-গোল ও লম্বা মুখের,- এমন কত । আত্মীয়তার ও পরিচয়ের ঘনিষ্ঠতায় অভিজ্ঞতা তাহার পৰ্য্যাপ্তেরও অধিক । এদের সম্বন্ধে এই বয়সেই তাহার আদেখলে-পাণ ঘুচিয়াছে। ঠিক বিতৃষ্ণা নয়, একটা চাপা অবহেলা কোথায় তাহার মনের এক কোণে অত্যন্ত সংগোপনে পুঞ্জিত হইয়া উঠিতেছিল, কাল তাহাতে প্ৰথম ধাক্কা লাগিয়াছিল নতুন-মাকে দেখিয়া। তেরো বৎসর পূৰ্ব্বেকার কথা সে প্রায় ভুলিয়াই ছিল, কিন্তু সেই নতুন-মা যৌবনের আর এক প্ৰান্তে পা দিয়া কাল যখন তাহার ঘরের মধ্যে গিয়া দেখা দিলেন, তখন সকৃতজ্ঞ-চিত্তে আপনাকে সংশোধন করিয়া এই কথাটাই মনে মনে বলিয়াছিল যে নারীর সত্যকার রূপ যে কতবড় দুর্লভ-দর্শন তাহা জগতের অধিকাংশ লোকে জানেইনা। আজ গাড়ীর মধ্যে আলো ও আঁধারের ফাকে ফঁাকে মরণাপন্ন এই মেয়েটিকে দেখিয়া ঠিক সেই কথাটাই সে আর