পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

শেষের পরিচয় s চোরা মহামহোপাধ্যায় বলিয়া শঙ্কা হয় । হোমিওপ্যাথি শাস্ত্ৰ হইতে wireless পৰ্যন্ত তাহার অধিগত। তাহার মুখে শুনিলে বৈদুতিক-তরঙ্গ প্রবাহের জ্ঞান মার্কোনির অপেক্ষ নিতান্ত কম বলিয়া সন্দেহ হয়না । কািন্টনেন্টাল গ্রন্থকারদের নাম রাখালের কণ্ঠস্থ,-কে কয়টা বই লিখিয়াছেন সে অনর্গল বলিতে পারে। হিউমের সহিত লকের গরমিল কতটুকু এবং স্পিনোজার সঙ্গে দেকাতের আসল মিল কোনখানে এবং ভারতীয় দর্শনের কাছে তাহা কত অকিঞ্চিৎকর এ সকল তত্ত্বকথা সে পণ্ডিতের মতোই প্ৰকাশ করে। বুয়ার-ওয়ারের সেনাপতি কে-কে, রুশ-জাপান যুদ্ধে কিসের জন্য রুশের পরাজয় ঘটিল, আমেরিকানরা কি করিয়া এত টাকা করিল। এ সকল বিবরণ তাহার নখগ্রে। ভারতীয় মুদ্রা বিনিময়ে বাট্টার হার কি হওয়া উচিত, রিভাস কাউন্সিল বেচিয়া ভারতের কােন্ত, টাকা ক্ষতি হইল, গোলন্ড ষ্টাণ্ডার্ড রিজার্ভে কত সোনা আছে এবং করেন্সি আমানতে কত টাকা থাকা উচিত এ সম্বন্ধে সে একেবারে নিঃসংশয় । এমন কি নিউটনের সহিত আইন-ষ্টিনের মতবাদ কতদিনে সামঞ্জস্য লাভ করিবে এ ব্যাপারেও ভবিষ্যদ্বাণী করিতে তাহার বাধেনা । শুনিয়া কোিচকেহ হাসে, কেহ বা শ্রদ্ধায় বিগলিত হইয়া যায় । কিন্তু একটা কথা সকলেই অকপটে স্বীকার করে যে রাখাল পরোপকারী। সাধ্যে কুলাইলে সাহায্য করিতে স্ত্ৰ কোথাও পরামুগ্ধ হয়না। ৰহু গৃহেই রাখালের অবাধ গতি, অবারিত দ্বার। খাটাইয়া লইতে তাহাকে কেহ ছাড়েন। যে-সব মেয়ের বয়সে বড়, মাঝে মাঝে অনুযোগ করিয়া বলেন, রাখাল এতোমার ভারি অন্যায়, এইবার একটা বিয়ে-থা কোরে সংসারী হও । কত কাল আর এমনভাবে কাটাবে,-বয়স তো হোলো । রাখাল কানে আঙুল দিয়া বলে আর যা বলেন, বলুন, শুধু এই আদেশটি করবেননা । আমি বেশ আছি । ዶ