শিবনাথ ঘাড় নাড়িয়া কহিল, না জানিনে। তবে, এ জানি, অপরের সম্বন্ধে আপনার কৌতূহল যেমন অপরিসীম, খবর সংগ্রহ করবার অধ্যবসায়ও তেমনি বিপুল। কি স্বীকার করতে হবে আদেশ করুন।
অক্ষয় কহিলেন, আপনার স্ত্রী বিদ্যমান। তাঁকে ত্যাগ করে আপনি আবার বিবাহ করেছেন। সত্য কি না?
আশুবাবু সহসা চটিয়া উঠিলেন,—আপনি কি-সব বলছেন অক্ষয়বাবু? একি কখনো হয়, না হতে পারে?
শিবনাথ নিজেই বাধা দিল, বলিল, কিন্তু তাই হয়েছে আশুবাবু। তাঁকে ত্যাগ করে আমি আবার বিবাহ করেছি।
বলেন কি? কি ঘটেছিল?
শিবনাথ কহিল, বিশেষ কিছুই না। স্ত্রী চিররুগ্ন। বয়সও ত্রিশ হতে চললো,—মেয়েমানুষের পক্ষে এই ত যথেষ্ট! তাতে ক্রমাগত রোগ ভোগ করে করে দাঁত পড়ে চুল পেকে একেবারে যেন বুড়ি হয়ে গেছে। এই জন্যেই ত্যাগ করে আবার একটা বিয়ে করতে হলো।
আশুবাবু বিহ্বল-চক্ষে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন,—অ্যাঁ! শুধু এই জন্যে? তাঁর আর কোন অপরাধ নেই?
শিবনাথ কহিল, না, মিথ্যে একটা অপবাদ দিয়ে লাভ কি আশুবাবু?
তাহার এই নির্মল সত্যবাদিতায় অবিনাশ যেন ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল—লাভ কি আশুবাবু! পাষণ্ড! তোমার লাভ-লোকসান চুলোয় যাক, একবার মিথ্যে করেই বল যে, সে গভীর অপরাধ করেছিল, তাই তাকে ত্যাগ করেছ। একটা মিথ্যেতে আর তোমার পাপ বাড়বেনা।