শিবনাথ কহিল, অক্ষর-পরিচয়ের লোভে ত বিবাহ করিনি, করেছি রূপের জন্যে। এ বস্তুটির বোধ হয় তাতে অভাব নেই।
এই উক্তির পরে মনোরমা আর একবার উঠিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু এবারও তাহার দুই পা পাথরের ন্যায় ভারী হইয়া রহিল। কৌতূহল ও উত্তেজনাবশে কেহই তাহার প্রতি চাহে নাই। চাহিলে হয়ত ভয় পাইত।
হরেন্দ্র কহিল, তা হলে এটা বোধ হয় সিভিল বিবাহই হলো?
শিবনাথ ঘাড় নাড়িয়া জবাব দিল, না—বিবাহ হলো শৈব মতে।
অবিনাশ কহিলেন, অর্থাৎ, ফাঁকির রাস্তাটুকু যেন দশদিক দিয়েই খোলা থাকে, না শিবনাথ?
শিবনাথ সহাস্যে কহিল, এটা ক্রোধের কথা অবিনাশবাবু। নইলে বাবা দাঁড়িয়ে থেকে যে বিবাহ দিয়ে গিয়েছিলেন তার মধ্যে ত ফাঁকি ছিল না, অথচ ফাঁক যথেষ্টই ছিল। সেটা বার করবার চোখ থাকা চাই।
অবিনাশ উত্তর দিতে পারিলেন না, সমস্ত মুখ তাঁহার ক্রোধে আরক্ত হইয়া উঠিল।
আশুবাবু নিঃশব্দ নতমুখে বসিয়া কেবলি ভাবিতে লাগিলেন, এ কি হইল! এ কি হইল!
মিনিট দুই-তিন কাহারও মুখে কথা নাই, নিরানন্দ ও কলহের অবরুদ্ধ বাতাসে ঘর ভরিয়া গেছে,—বাহিরের একটা দমকা হাওয়া না পাইলেই নয়, ঠিক এমনি মনোভাব লইয়া অবিনাশবাবু অকস্মাৎ বলিয়া উঠিলেন, যাক, যাক, যাক,—যাক এ সব কথা। শিবনাথ, তা হলে সেই পাথরের কারবারটা করচ? না?
শিবনাথ বলিল, হাঁ।
তোমার বন্ধুর নাবালক ছেলেমেয়েদের ব্যবস্থা ত তোমাকেই