শেষ প্রশ্ন । ט8א ঢেউ বয়ে যাচ্ছে,—হিন্দুর আদর্শ ও-চোখে তামাসা বলেই ঠেকৃবে । দিন, কি রান্না হয়েছে খেতে দিন । এই যে দিই, বলিয়া কমল আসন পাতিয়া ঠাই করিয়া দিল । একটুও রাগ করিলন । হরেন্দ্র সেই দিকে চাহিয়া হঠাৎ বলিয়া উঠিল, আচ্ছা ধরুন কেউ যদি যথার্থ-ই সমস্ত বিলিয়ে দিয়ে সত্যকার অভাব ও দৈন্তের মাঝেই নেমে আসে তখন তো অভিনয় বলে তাকে তামাসা করা চলবেন ? তখন তো— কমল বাধা দিয়া কহিল, না, তখন আর তামাসা নয়,—তখন সত্যিকার পাগল বলে মাথা চাপড়ে কাদবার সময় হবে। হরেনবাবু, কিছুকাল পূৰ্ব্বে আমিও কতকৃটা আপনার মতো করেই ভেবেচি, উপবাসের নেশার মতো আমাকেও তা’ মাঝে মাঝে আচ্ছন্ন করেচে, কিন্তু এখন সে সংশয় আমার ঘুচেচে। দৈন্য এবং অভাব ইচ্ছাতেই আসুক বা ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আসুক ও নিয়ে দৰ্প করবার কিছু নেই। ওর মাঝে আছে শূন্ততা, ওর মাঝে আছে দুৰ্ব্বলতা, ওর মাঝে আছে পাপ—অভাব যে মানুষকে কত হীন, কত ছোট করে আনে সে আমি দেখে এসেচি মহামারীর মধ্যে—মুচীদের পাড়ায় গিয়ে। আরও একজন দেখেচেন তিনি আপনার বন্ধু রাজেন । কিন্তু তার কাছ থেকে তো কিছু পাওয়া যাবেন!—আসামের গভীর অরণ্যের মত কি যে সেখানে লুকিয়ে আছে কেউ জানেনা। আমি প্রায় ভাবি, আপনার তাকেই দিলেন বিদায় করে। সেই যে কথায় আছে মণি ফেলে অঞ্চলে কাচ-খণ্ড গেরো দেওয়া,—আপনারা ঠিক কি তাই করলেন । ভেতর থেকে কোথাও নিষেধ পেলেননা ? - আশ্চৰ্য্য হরেন্দ্র উত্তর দিলনা, চুপ করিয়া রহিল।
পাতা:শেষ প্রশ্ন.djvu/২৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।