বিধি বক্র হলে মানুষের কৌশল খাটে না, অসম্ভব বস্তুও সম্ভব হয়ে পড়ে। হলও তাই। এই বলিয়া তিনি সেদিনের ঝড়-বাদলের ব্যাপার সবিস্তারে বর্ণনা করিয়া কহিলেন, আমাদের মণি কিন্তু খুশী হতে পারেনি। ওরই সমবয়সী, হয়ত কিছু বড় হতেও পারে, কিন্তু মণি বলে, শিবনাথবাবু সেদিন সত্য কথাই বলেছিলেন, মেয়েটি যথার্থই অশিক্ষিত কোন এক দাসী-কন্যা। অন্ততঃ, সে যে আমাদের ভদ্রসমাজের নয়, তাতে তার সন্দেহ নেই।
অবিনাশ কৌতূহলী হইয়া উঠিলেন, কি করে বোঝা গেল?
আশুবাবু বলিলেন, মেয়েটি নাকি ভিজে কাপড়ের পরিবর্তে একখানি ফরসা কাপড় চেয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, তিনি কারও ব্যবহার করা সাবান ব্যবহার করতে পারেন না, ঘৃণা বোধ হয়।
অবিনাশ বুঝিতে পারিলেন না ইহার মধ্যে ভদ্রসমাজের বহির্ভূত প্রার্থনা কি আছে।
আশুবাবুও ঠিক তাহাই কহিলেন, বলিলেন, এর মধ্যে অসঙ্গত যে কি আছে আমি আজও ভেবে পাইনি। কিন্তু মণি বলে, কথার মধ্যে নয় বাবা, সেই বলার ভঙ্গীর মধ্যে যে কি ছিল সে কানে না শুনলে বোঝা যায় না। তা ছাড়া, মেয়েদের চোখ-কানকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। আমাদের ঝিটির পর্যন্ত বুঝতে নাকি বাকি ছিল না যে, মেয়েটি তাদেরই একজন, তার মনিবদের কেউ নয়। খুব নীচু থেকে হঠাৎ উঁচুতে তুলে দিলে যা হয়, এরও হয়েছে ঠিক তাই।
অবিনাশ ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিলেন, দুঃখের কথা! কিন্তু আপনার সঙ্গে পরিচয় হল কি ভাবে? আপনার সঙ্গে কি কথা কইলে নাকি?
আশুবাবু বলিলেন, নিশ্চয়। ভিজে কাপড় ছেড়ে সোজা আমার