কয়েক মূহুর্ত্ত নীরবে থাকিয়া আবিনাশ কহিলেন, আমার কথায় কি আপনি ক্ষুণ্ণ হলেন।
আশুবাবু উঠিয়া বসিলেননা, তেমনি অর্দ্ধশায়িত ভাবে থাকিয়াই ধীরে ধীরে বলিলেন, ক্ষুণ্ণ নয় অবিনাশবাবু, কিন্তু কেমন একটা ব্যথার মত লেগেছে। তাই ত আপনাদের সঙ্গে দেখা করবার জন্যে এমন ছটফট করছিলাম। কি মিষ্টি কথা মেয়েটির,-শুধু রূপই নয়।
অবিনাশ সহাস্যে উত্তর দিলেন, কিন্তু আমি ত তাঁর রূপও দেখিনি কথাও শুনিনি আশুবাবু।
আশুবাবু বলিলেন, কিন্তু সে সুযোগ যদি কখনো হয় ত তাদের ত্যাগ করার অবিচারটা বুঝবেন। আর কেউ না বুঝুক আপনি বুঝতে পারবেন এ আমি নিশ্চয় জানি। যাবার সময় মেয়েটি আমাকে বললে আপনি আমার স্বামীর গান শুনতে ভালোবাসেন, কেন তাঁকে মাঝে মাঝে ডেকে পাঠাননা? আমি যে কেউ আছি এ কথা না-ই বা মনে করলেন। আমি ত আপনাদের মধ্যে আসবার দাবী করিনে।
অবিনাশ কিছু আশ্চর্য্য হইলেন, বলিলেন, এ তো খুব আশিক্ষিতের মত কথা নয় আশুবাবু? শুনলে মনে হয় তাঁর নিজের সম্বন্ধে যে ব্যবস্থাই আমরা করি, স্বামীটিকে সে ভদ্র-সমাজে চালিয়ে দিতে চায়।
আশুবাবু বলিলেন, বস্তুতঃ, তাঁর কথা শুনে মনে হল সে সব জানে। আমরা যে সেদিন তাঁর স্বামীকে আপমান করে বিদায় করেছিলাম এ ঘটনা শিবনাথ তাঁর কাছে গোপন করেনি। খুব গোপন করে চলবার লোকও শিবনাথ নয়।
অবিনাশ স্বীকার করিয়া কহিলেন, স্বভাবতঃ সে তাই বটে। কিন্তু একটা জিনিস সে নিশ্চয়ই গোপন করেছে। এই মেয়েটি যেই হোক একে ত সে সত্যই বিবাহ করেনি।