দিন দশেক পরে অবিনাশ দিল্লী হইতে ফিরিয়া আসিলেন। তাঁহার বছর দশেকের ছেলে জগত আসিয়া হাতে একখানি ছোত পত্র দিল। মাত্র একটি ছত্র লেখা,—বৈকালে নিশ্চয় আসবেন। আশু বদ্যি।
জগতের বিধবা মাসি দ্বারের পর্দ্দা সরাইয়া ফুটন্ত গোলাপের ন্যায় মুখখানি বাহির করিয়া কহিল, আশু বদ্যিরা কি রাস্তায় চোখ পেতে বসেছিল না কি,—আস্তে না আস্তেই জরুরি তলব পাঠিয়েছে যেতে হবে?
অবিনাশ কহিলেন, বোধ হয় কোন বিশেষ প্রয়োজন আছে।
প্রয়োজন না ছাই, তাঁরা কি মুখুয্যে মশাইকে গিলে খেতে চায় না কি?
অবিনাশ তাঁহার ছোট শালীকে আদর করিয়া কখনো ছোট গিন্নি কখনো বা তাঁহার নাম নীলিমা বলিয়া ডাকিতেন। হাসিয়া বলিলেন, ছোট গিন্নী, অমৃত-ফল অনাদরে গাছতলায় পড়ে থাকতে দেখতে বাইরের লোকের একটু লোভ হয় বই কি।
নীলিমা হাসিল, কহিল, তা'হলে সেটা যে মাকাল ফল, অমৃত-ফল নয়, তাদের জানিয়ে দেওয়া দরকার।
অবিনাশ বলিলেন, দিয়ো। কিন্তু তাঁরা বিশ্বাস করবেনা,-লোভ আরও বেড়ে যাবে। হাত বাড়াতে ছাড়বেনা।
নীলিমা বলিল, তাতে লাভ হবেনা মুখুয্যে মশাই। নাগালের বাইরে এবার শক্ত করে বেড়া বাঁধিয়ে রাখবো। এই বলিয়া সে হাসি চাপিয়া পর্দ্দার আড়ালে অন্তর্হিত হইয়া গেল।