অবিনাশের হাসিমুখ গম্ভীর হইল, জিজ্ঞাসা করিলেন, এই বাবাজীটি কে আশুবাবু? এঁর কথাই কি একদিন বলতে গিয়েও হঠাৎ চেপে গিয়েছিলেন?
আশুবাবু বলিলেন, হাঁ। কিন্তু আজ আর বলতে, অন্ততঃ, আপনাকে বলতে বাধা নেই। অজিতকুমার আমার ভাবী জামাই, মণির বর। এই দুজনের ভালবাসা পৃথিবীর একটা অপূর্ব বস্তু। ছেলেটি রত্ন।
অবিনাশ স্থির হইয়া শুনিতে লাগিলেন; আশুবাবু পুনশ্চ কহিলেন, আমরা ব্রাহ্ম-সমাজের নই, হিন্দু। সমস্ত ক্রিয়াকর্ম হিন্দুমতেই হয়। যথাসময়ে, অর্থাৎ বছর-চারেক পূর্বেই এদের বিবাহ হয়ে যাবার কথা ছিল, হতোও তাই, কিন্তু হল না। যেমন করে এদের পরিচয় ঘটে, সেও এক বিচিত্র ব্যাপার,—বিধিলিপি বললেও অত্যুক্তি হয় না। কিন্তু সে কথা এখন থাক।
অবিনাশ তেমনি স্তব্ধ হইয়াই রহিলেন; আশুবাবু বলিলেন, মণির গায়েহলুদ হয়ে গেল, রাত্রির গাড়িতে কাশী থেকে ছোটখুড়ো এসে উপস্থিত হলেন। বাবার মৃত্যুর পরে তিনিই বাড়ির কর্তা, ছেলে-পুলে নেই, খুড়ীমাকে নিয়ে বহুদিন যাবৎ কাশীবাসী। জ্যোতিষে অখণ্ড বিশ্বাস, এসে বললেন, এ বিবাহ এখন হতেই পারে না। তিনি নিজে এবং অন্যান্য পণ্ডিতকে দিয়ে নির্ভুল গণনা করিয়ে দেখেছেন যে, এখন বিবাহ হলে তিন বৎসর তিন মাসের মধ্যেই মণি বিধবা হবে।
একটা হুলস্থূল পড়ে গেল, সমস্ত উদ্যোগ-আয়োজন লণ্ডভণ্ড হবার উপক্রম হল, কিন্তু খুড়োকে আমি চিনতাম, বুঝলাম এর আর নড়চড় নেই। অজিত নিজেও মস্ত বড়লোকের ছেলে, তারও এক বিধবা খুড়ী ছাড়া সংসারে কেউ ছিল না, তিনি ভয়ানক রাগ করলেন; অজিত