কমল কহিল, ও—এমনিই। তোমার বাড়ি যাবার তাড়া পড়েছে বুঝি? কিন্তু বাড়িটি ত সঙ্গেই আছেন। এই বলিয়া সে হাসিল।
আশুবাবু লজ্জা পাইলেন, হরেন্দ্র-অক্ষয় মুখ টিপিয়া হাসিল, মনোরমা অন্যদিকে চক্ষু ফিরাইল, কিন্তু যাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলা হইল সেই শিবনাথের আশ্চর্য সুন্দর মুখের উপরে একটি রেখারও পরিবর্তন হইল না,—সে যেন একেবারে পাথরে গড়া, যেন দেখিতেও পায় না, শুনিতেও পায় না।
অবিনাশের দেরি সহিতেছিল না, বলিলেন, আমার প্রশ্নের জবাব দাও।
কমল কহিল, কিন্তু স্বামীর নিষেধ যে। তাঁর অবাধ্য হওয়া কি উচিত? এই বলিয়া সে হাসিতে লাগিল। অবিনাশ নিজেও না হাসিয়া পারিলেন না, কহিলেন, এ ক্ষেত্রে অপরাধ হবে না। আমরা এতগুলি লোকে মিলে তোমাকে অনুরোধ করচি, তুমি বল।
কমল বলিল, আশুবাবুকে আজ নিয়ে শুধু দুটি দিন দেখতে পেয়েচি, কিন্তু এর মধ্যেই মনে মনে ওঁকে আমি ভালবেসেচি। এই বলিয়া শিবনাথকে দেখাইয়া কহিল, এখন বুঝতে পারচি উনি কেন আমাকে বলতে নিষেধ করছিলেন।
আশুবাবু নিজেই তাহাতে বাধা দিলেন, কহিলেন, কিন্তু আমার দিক থেকে তোমার কুণ্ঠাবোধ করবার কোন কারণ নেই। বুড়ো আশু বদ্যি বড্ড নিরীহ মানুষ কমল, তাকে মাত্র দুটি দিন দেখেই অনেকটা ঠাওর করেচ, আরও দিন-দুই দেখলেই বুঝবে তাকে ভয় করার মত ভুল আর সংসারে নেই। তুমি স্বচ্ছন্দে বল, এ-সব কথা শুনতে আমার সত্যিই আনন্দ হয়।
কমল কহিল, কিন্তু ঠিক এইজন্যেই ত উনি বারণ করেছিলেন,