পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
দারােগার দপ্তর, ৭৮ম সংখ্যা।

তাহাকে কহেন, “কি গো ত্রৈলোক্য তুমি এই বাড়ীতে থাক নাকি? তবে এই সকল কর্ম্মচারীকে কেন আর মিথ্যা কষ্ট দিতেছ, রাজকুমারীকে কেন হত্যা করূিলে, তাহা বলিয়া দেও না; তাহা হইলে সমস্ত গোলযোগ চুকিয়া যাউক। সেই কর্ম্মচারীর এইরূপ কথা শুনিয়া আমি তাহাকে কহিলাম, “কেন মহাশয়! ত্রৈলোক্য এই হত্যা করিয়াছে, এরূপ সন্দেহ আপনার হইতেছে কেন?” উত্তরে তিনি কহিলেন, “আপনারা কি তবে ইহাকে চিনেন না? এই ত্রৈলোক্য যে কত স্ত্রীলোক পুষ্করিণীতে ডুবাইয়া মারিয়া, তাহাদিগের অলঙ্কার সকল আত্মসাৎ করিয়াছে, তাহা কি আপনারা পূর্ব্বে শ্রবণ করেন নাই?” আমি কহিলাম, “শুনিয়াছি, আলিপুরকোর্টে তাহার মোকদ্দমা হয়, এবং বিচারে তাহার দণ্ড হয় নাই; কিন্তু এই কি সেই ত্রৈলোক্য?” কর্ম্মচারী কহিলেন, “ইনিই সেই ত্রৈলোক্য।” এই কথা শুনিয়া আমরা আর স্থির থাকিতে পারিলাম না; তখন উহাকে লইয়া আমরা সকলেই অনুসন্ধানে নিযুক্ত হইলাম, এবং সেই পর্য্যন্ত উহাকে লইয়া সবিশেষরূপে অনুসন্ধান চলিতেছে; কিন্তু এ পর্য্যন্ত ইহার নিকট হইতে কোন কথা প্রকাশ করাইতে পারা যায় নাই।

 আমি। উহার নিকট হইতে কোন কথা বাহির করা, বা অপহৃত অলঙ্কারগুলির পুনরুদ্ধার করা নিতান্ত সহজ কার্য্য নহে। ও যে কি ভয়ানক স্ত্রীলোক, তাহা আপনারা জানেন না; কিন্তু আমি উহাকে উত্তমরূপে চিনি।

 কর্ম্মচারী। তাহা হইলে আপনারও কি বিশ্বাস যে, উপস্থিত মোকদ্দমায় এ-ই আসামী? রাজকুমারী ত্রৈলোক্যের দ্বারা হত হইয়াছে?