পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
১৯

 আমি। এই হত্যা যে ইহার দ্বারা হইয়াছে, তাহা কি বেশ প্রমাণিত হইয়াছে?

 কর্ম্মচারী। এখন পর্য্যন্ত সম্পূর্ণরূপে প্রমাণিত না হইলেও, এই হত্যা যে ইহার দ্বারা হইয়াছে তাহার আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই।

 আমি। ইহার উপর সন্দেহ হইবার কারণ কি?

 কর্ম্মচারী। যাহার ব্যবসাই কেবল হত্যা করা, তাহার দ্বারা যে এই হত্যা হয় নাই, তাহা আমি কিরূপে বলিতে পারি?

 আমি। হত্যাই যে ইহার ব্যবসা তাহা আপনাকে কে বলিল?

 কর্ম্মচারী। তাহা আর কে বলিবে? কেন আপনি কি জানেন না যে, হত্যা করাই ইহার ব্যবসা। আপনিই ত হত্যাপরাধে ইহাকে চালান দিয়াছিলেন।

 আমি। পূর্ব্বে হত্যাপরাধে আমি ইহাকে চালান দিয়াছিলাম বলিয়াই যে, এই হত্যা ইহা দ্বারা হইয়াছে, তাহা বলা যায় না। পূর্ব্বে আমি ইহার বিরুদ্ধে অনেক লোকের নিকট হইতে অনেক কথা শুনিতে পাই; সেইরূপ কথা শুনিতে শুনিতে আমার মনের গতি খারাপ হইয়া যায়। সেই সময় যেমন ইহার উপর একটী নালিশ হয়, অমনি আমি তাহা বিশ্বাস করিয়া, সেই মোকদ্দমার অনুসন্ধান করিতে প্রবৃত্ত হই। অনুসন্ধান আর কি করি? ইহার শত্রুপক্ষীয় লোকে যাহা বলে, তাহারই উপর বিশ্বাস করিয়া, হত্যাপরাধে ইহাকে দোষী স্থির করিয়া লই, এবং বিচারার্থ ইহাকে মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট প্রেরণ করি। মাজিস্ট্রেট সাহেব ইহাকে দায়রায় পাঠাইয়া দেন। যখন দায়রার বিচারে সাক্ষীগণের উপর জেরা হইতে থাকে, তখনই আমি বুঝিতে পারি যে, ত্রৈলোক্যকে আমি অনর্থক মিথ্যা কষ্ট দিয়াছি। জজসাহেবও সেই মোকদ্দমার