পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
দারােগার দপ্তর, ৭৮ম সংখ্যা।

 ইহার পর সেই বাড়ীর কি স্ত্রী, কি পুরুষ, সকল লোককেই আমি সেই স্থানে ডাকাইলাম, সকলেই আসিয়া আমার নিকট উপবেশন করিল। আমি অন্য আর একজন কর্ম্মচারীকে কহিলাম, “আপনি এখন ইহাদিগের জবানবন্দী পুনরায় লিখিতে আরম্ভ করুন।” আমার কথা শুনিয়া সেই স্থানে যে সকল কর্ম্মচারী উপস্থিত ছিলেন, তাঁহারা স্থিরভাবে বসিয়া রহিলেন, কাহারও মুখে কোন কথা বাহির হইল না। বাড়ীর ভাড়াটিয়াগণ পুনরায় কিরূপ জবানবন্দী দেয়, তাহাই সকলে নিতান্ত ঔৎসুক্য সহকারে শুনিতে লাগিলেন। আমি এক একজনকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলাম, সেই অপর কর্ম্মচারী মহাশয় তাহা লিখিতে আরম্ভ করিলেন। ভাড়াটিয়াগণ যাহা বলিতে লাগিল, তাহা শুনিয়া অপরাপর কর্ম্মচারীগণ নিতান্ত বিস্মিত হইতে লাগিলেন; ত্রৈলোক্যের মস্তক ঘুরিতে লাগিল, তাহার সমস্ত শরীর কাঁপিতে লাগিল; তথাপি কে কি বলে, তা শুনিবার নিমিত্ত সে সেই স্থানে বসিয়া রহিল।

 পুনরায় সেই বাড়ীর ভাড়াটিয়াগণের যেরূপ ভাবে জবানবন্দী লেখা হইতে লাগিল, তাহার সংক্ষেপ মর্ম্ম এইরূপ:—

 একটী স্ত্রীলোক কহিল,—“আমি হরিকে উত্তমরূপে চিনি, সে ত্রৈলোক্যের পুত্ত্র। তাহার মাতার সহিত সে এই বাড়ীতেই থাকে। কোনরূপ কায-কর্ম্ম করিতে তাহাকে কখনও দেখি নাই, বা শুনি নাই। অথচ বেশ্যালয়ে গমন ও মদ্যাদি পান করিতে তাহাকে প্রায়ই দেখিতে পাই। এই সকল কার্য্যের নিমিত্ত যে সকল অর্থের প্রয়োেজন হয়, তাহা সে কোথা হইতে প্রাপ্ত হয়, তাহা বলিতে পারি না। যে দিবস রাজকুমারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়, তাহার পূর্ব্বদিবস সন্ধ্যার পূর্ব্বে রাজকুমারীর সহিত সে নির্জ্জনে কি পরামর্শ করিতেছিল, তাহা