পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় দৃশ্য

বিধুমুখী ও সতীশ

 সতীশ। মা, কোনোমতে টাকাটা পেয়েছি, নেকলেসও নেলির ওখানে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বাবার সেকালের আমলের সোনার গুড়গুডিটা সিন্দূকেপটির মতি পালের ওখানে যে বাঁধা রেখে এলুম, নিশ্চিন্ত হ’তে পারচিনে।

 বিধুমুখী। তোর কোন ভয় নেই, সতীশ। তিনি এ সব জিনিষের পরে কোনো মমতাই রাখেন না। কেবল ওঁব ঠাকুরদাদার জিনিষ বলেই আজ পর্য্যন্ত লোহার সিন্দুকে ছিলো। এক দিনের জন্যে খবরও রাখেন নি। সেটা আছে কী গেছে, সে তাঁর মনেও নেই।

 সতীশ। সে আমি জানি। কিন্তু ভারী ভয় হচ্ছে, যারা বন্ধক বেখেছে, তারা হয়তো বাবাকে চিঠি লিখে খোঁজ ক’রবে। তুমি কোনো মতে তোমার গহনাপত্র দিয়ে সেটা খালাস করে’ দাও।

 বিধুমুখী। হায়রে কপাল, গহনাপত্র কিছু কী বাকি আছে। সে কথা আর জিজ্ঞাসা করিস্‌নে। যাই হোক, আমি ভয় করিনে—প্রজাপতি আশীর্ব্বাদে নলিনীর সঙ্গে আগে তোর কোনোমতে বিয়ে হয়ে যাক, তার পরে তোর বাবা যা বলেন, যা করেন, সব সহ্য ক’রতে হবে। কথাবার্ত্তা কিছু এগিয়েচে?

 সতীশ। সর্ব্বদা যে রকম লোক ঘিরে থাকে, কথা কবো কখন? জানো তো সেই নন্দী—সে যেন বিলিতি কাঁটা গাছের বেড়া। তার

[ ১৫