পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
দ্বিতীয় দৃশ্য

একটা কোনো গল্প বলে’ নেকলেস্‌টা ফিবিয়ে আন্‌তে হবে, তার পরে আমার নিজের গলায় পর্‌বার জন্যে গয়না মিল্‌বে!

 বিধুমুখী। সে আবার কী?

 সতীশ। এক গাছা দড়ি।

 বিধুমুখী। দেখ্, আমাকে আর রোজ রোজ কাঁদাস নে। আমার রক্ত শুকিয়ে গেল, চোখের জলও বাকি নেই। একদিকে তোর বাবা, আব একদিকে তুই—উপরে সবার চাপ আর নীচে আগুন, আমি যে গুমে গুমে—

সতীশের মাসি সুকুমারী ও মেসোমশায় শশধর বাবুর প্রবেশ

 এসো দিদি, ব’সো। আজ কোন্ পুণ্যে রায়মশায়ের দেখা পাওয়া গেলো। দিদি না আস্‌লে তোমার আর দেখা পাবার যো নেই।

 শশধর। এতেই বুঝবে তোমাব দিদির শাসন কি কড়া। দিন-রাত্রি চোখে চোখে রাখেন!

 সুকুমারী। তাই বটে, এমন রত্ন ঘরে রেখেও নিশ্চিন্ত মনে ঘুমনো যায় না।

 বিধুমুখী। নাক ডাকার শব্দে।

 সুকুমারী। সতীশ, ছি ছি, তুই এ কি কাপড় প’রেছিস? তুই কি এই রকম ধুতি পরে’ কলেজে যাস্ না কি? বিধু, ওকে যে লাউঞ্জ সুট্‌টা কিনে দিয়েছিলাম, সে কি হ’লো?

 বিধুমুখী। সে ও কোন্‌কালে ছিঁড়ে ফেলেছে!

 সুকুমারী। তা তো ছিঁড়্‌বেই। ছেলেমানুষের গায়ে কাপড় কত দিন টেকে! তা তাই বলে’ কি আর নূতন সুট্ তৈরি করাতে নেই! তোদের ঘরে সকলি অনাসৃষ্টি!

[১৭