পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
দ্বিতীয় দৃশ্য

 বিধুমুখী। জানই তো দিদি, তিনি ছেলের গায়ে সভ্য কাপড় দেখ্‌লেই আগুন হ’য়ে ওঠেন। আমি যদি না থাক্‌তেম তো তিনি বোধ হয় ছেলেকে দোলাই গায়ে দিয়ে কোমরে ঘুন্‌সি পরিয়ে ইস্কুলে পাঠাতেন—মা গো! এমন সৃষ্টিছাড়া পছন্দও কারো দেখিনি।

 সুকুমারী। মিছে না! এক বই ছেলে নয়, একটু সাজাতে গোজাতেও ইচ্ছা করে না। এমন বাপও তো দেখিনি। সতীশ আমি তোর জন্য একট কাপড় ব্যাম্‌জের ওখানে অর্ডার দিয়ে রেখেছি। আহা, ছেলেমানুষেব কি সখ হয় না?

 সতীশ। এক সুটে আমার কি হবে, মাসিমা। লাহিড়ি সাহেবের ছেলে আমার সঙ্গে একসঙ্গে পড়ে— সে আমাকে তাদেব বাড়ীতে টেনিস খেলায় নিমন্ত্রণ ক’রেছে, আমি নানা ছুতো করে’ কাটিয়ে দিই। আমার তো কাপড় নেই।

 শশধর। তেমন জাযগায় নিমন্ত্রণে না যাওয়াই ভালো, সতীশ।

 সুকুমারী। আচ্ছা আচ্ছা, তোমার আর বক্তৃতা দিতে হবে না। ওর তোমার মতন বয়স যখন হবে, তখন—

 শশধর। তখন ওকে বক্তৃতা দেবার অন্য লোক হবে, বৃদ্ধ মেসোর পরামর্শ শোন্‌বার অবসর হবে না।

 সুকুমারী। আচ্ছা, মশায়, বক্তৃতা কর্‌বার অন্য লোক যদি তোমাদেব ভাগ্যে না জুটত, তবে তোমাদেব কি দশা হ’ত ব’লো দেখি।

 শশধর। সে কথা বলে’ লাভ কি। সে অবস্থা চোখ বুঝে কল্পনা করাই ভালো!

ভৃত্যের প্রবেশ

 ভৃত্য। কর্ত্তাবাবু লোহার সিন্দুকের চাবি চেয়েছেন।

১৮]