পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
তৃতীয় দৃশ্য

 সতীশ। আমার হৃদয়টার ঠিকানা যদি জান্‌তে, তা’হ’লে খুব বেশি ক’রে তাকে খুঁজে বেড়াতে হ’তো না।

 নলিনী। (করতালি দিয়া) Bravo! মিষ্টার নন্দীর দৃষ্টান্তে মিষ্ট কথার আমদানি সুরু হ’য়েছে। উন্নতি হবে ভবসা হ’চ্ছে। এসো একটু কেক খেয়ে যাবে, মিষ্ট কথার পুরস্কার মিষ্টান্ন।

 সতীশ। না আজ আর খাবো না, আমার শরীরটা

 নলিনী। সতীশ, আমার কথা শোনো,—টেনিস্ কোর্ত্তার খেদে শরীর নষ্ট কোরো না। কোর্ত্তা জিনিষটা জগতের মধ্যে সেরা জিনিষ, কিন্তু এই তুচ্ছ শরীরটা না হ’লে সেটা ঝুলিয়ে বেড়াবার সুবিধা হয় না।

 সতীশ। নেলি, আজ তোমাকে একটা খুব বিশেষ কথা বলতে এসেছি—

 নলিনী। না, না, বিশেষ কথার চেয়ে সাধারণ কথা আমি ভালোবাসি।

 সতীশ। যেমন করে’ হোক্ ব’লতেই হবে, নইলে বাঁচবো না, তার পরে যদি বিদায় করে’ দাও তবে মাথা হেঁট্ করে’ জন্মের মতোই—

 নলিনী। সর্ব্বনাশ! সহজে ব’ল্‌বার কথা পৃথিবীতে এত আছে যে, চমক-লাগানো কথা না ব’ল্‌লেও সময় কেটে যায়। আমারও ব’ল্‌বার কথা একটা আছে, তার পরে যদি সময় থাকে, তুমি ব’লো।

 সতীশ। আচ্ছা, তাই আগে বলে’ নাও, কিন্তু আমার কথা শুন্‌তেই হবে।

 নলিনী। ব’ল্‌বার জন্যেই তোমাকে ডেকেছি, বলে’ নিই, রাগ ক’রো না।

৪০]