পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ বােধ
তৃতীয় দৃশ্য

 জায়া। কে যে ব’ল্‌লে সমস্ত সম্পত্তি অনাথ আশ্রমে দিয়ে গেছে, কেবল সতীশের মা’র জন্য জীবিতকাল পর্য্যন্ত ৭৫ টাকা মাসহারা বরাদ্দ। এখন কি করা যায়!

 লাহিড়ি। এত ভাবনা কেন তোমার?

 জায়া। বেশ লোক যা হোক্ তুমি। তোমার মেয়ে যে সতীশকে ভালবাসে, সেটা বুঝি তুমি দুই চক্ষু খেয়ে দেখতে পাও না! তোমার নেলি এ দিকে লঙ্কার ধোঁয়া দিয়ে নন্দীকে দেশছাড়া করে দিয়েছে। নন্দী তো ভয়ে ওর কাছেই ঘেঁষতে চায় না। জানো বোধ হয়, চারুর সঙ্গে সে engaged.

 লাহিড়ি। সে দিন টেনিস কোর্টেই সেটা বোঝা গিয়েছিলো।

 লাহিড়ি জায়া। এখন উপায় কি ক’রবে?

 লাহিড়ি। আমি তো মন্মথর টাকার উপর কোনো দিন নির্ভর করি নি!

 জায়া। তবে কি ছেলেটির উপর নির্ভর করে’ বসেছিলে? অন্নবস্ত্রটা বুঝি অনাবশ্যক?

 লাহিড়ি। সম্পূর্ণ আবশ্যক। সতীশের একটি মেসো আছে বোধ হয় জান।

 জায়া। মেসো তো ঢের লোকেরই থাকে, তাতে ক্ষুধা শান্তি হয় না

 লাহিড়ি। এই মেসোটি আমার মক্কেল—অগাধ টাকা।— ছেলেপুলে কিছুই নেই—বয়সও নিতান্ত অল্প নয়। সে তো সতীশকেই পোষ্যপুত্র নিতে চায়।

 জায়া। মেসোটি তো ভালো। তা চট্‌পট্ নিক্ না। তুমি একটু তাড়া দাও না।

৫২ ]