পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ বােধ
চতুর্থ দৃশ্য

 সতীশ। তোমার উপদেশ মনে থাক্‌বে—আমিও দে’বো না! আজ হ’তে তোমার এখানে মুটে ভাড়া বেহারার মাইনে যত অল্প লাগে, সে দিকে আমার সর্ব্বদাই দৃষ্টি থাকবে। (সুকুমারীর প্রস্থান) সেই চিঠিটা এই বেলা শেষ করি, নইলে সময় পাবো না (চিঠি লিখতে প্রবৃত্ত)।

হরেনের প্রবেশ

 হরেন। দাদা, ও কি লিখ্‌চো, কা’কে লিখ্‌চো, বলো না?

 সতীশ। যা, যা, তোর সে খববে কাজ কি, তুই খেলা কর্‌গে যা!

 হরেন। দেখি না কি লিখ্‌চো—আমি আজকাল প’ড়্‌তে পারি।

 সতীশ। হরেন, তুই আমাকে বিবক্ত করিস নে বল্‌চি—যা তুই।

 হরেন। ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল, বয়ে আকাব বা, সয়ে আকার সা, ভালবাসা। দাদা কি ভালবাসার কথা লিখ্‌চো, বলো না। কাঁচা পেয়ারা?

 সতীশ। আঃ হরেন, অত চেঁচাসনে ভালবাসার কথা আমি লিখিনি।

 হরেন। অ্যাঁ, মিথ্যা কথা ব’ল্‌চো। ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল, বয়ে আকার সয়ে আকার ভালবাসা। আচ্ছা, মাকে ডাকি, তাঁকে দেখাও।

 সতীশ। না, না, মাকে ডাক্‌তে হবে না! লক্ষ্মীটি, তুই একটু খেলা কর্‌তে যা, আমি এইটে শেষ করি।

 হরেন। এটা কি দাদা! এ যে ফুলের তোড়া! আমি নেবো।

 সতীশ। ওতে হাত দিস্‌নে—হাত দিস্‌নে, ছিঁড়ে ফেল্‌বি।

 হবেন। না, আমি ছিঁড়ে ফেলবো না, আমাকে দাও না!

 সতীশ। খোকা, কাল তোকে অনেক তোড়া এনে দেবো, এটা থাক্।

 হরেন। দাদা, এটা বেশ, আমি এইটেই নেবো।

৫৮ ]