পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামল ও কাজল । রাজা স্বয়ং একখানি ব্যাভ্রাকৃতি স্বর্ণ-সিংহাসনের কাছে দাড়াইয়া ; তিনি তাহাতে উপবেশন করেন নাই, তাহার হস্তে বড় হীরকমণ্ডিত একখানি নাতিদীর্ঘ রাজদণ্ড । তাহার দেহ নগ্ন, ক্ৰমবৰ্দ্ধমান মুক্তার হার তাহার কণ্ঠে তিন চার লহরীতে বিরাজিত। তাহার গোফ শুভ্ৰ, দুই দিকে দুইটি ক্ষুদ্র বকের মত তাহাদের শুভ্ৰ মহিমা বিকাশ করিয়া দেখাইতেছে । তঁহার মাথায় একটি শুভ্ৰ টোপর, তাহার উপর কঙ্ক পাখীর শুভ্ৰ পালক। সেই পালকের নীচে যে একখানি প্ৰকাণ্ড হীরক সুৰ্য্য-কিরণে দীপ্ত হইয়া উঠিয়াছে, তাহা যেন হোমানলের শুভ্র দীপ্তি বিকীর্ণ করিতেছে। এই শিরস্ত্রাণের পার্থে চুলগুলি বক্রান্ত ও কুঞ্চিত এবং একেবারে সাদা । মনে হয় যেন একখানি শ্বেত মৰ্ম্মরের বিগ্ৰহ, তেমনি স্থির, গভীর, তেমনি অপলক দৃষ্টি, মহিমার শুভ্ৰ একখানি মুকুর-সদৃশ। রাজার পার্থে দাড়াইয়া আছেন মন্ত্রী সমুদ্র সেন। উভয়ে সমবয়স্ক ; সমুদ্র সেনের নাসিক একখানি শানিত তরবারির ন্যায়, প্রখর প্রতিভা-ব্যঞ্জক। কিন্তু তিনি রাজার মত ঠিক ঋজু নহেন, বয়সের আধিক্যে মেরুদণ্ড ঈষৎ বাকিয়া গিয়াছে। তিনি রাজার মত একেবারে বিরলদন্ত নহেন ; শ্বেত মৌক্তিকের মধ্যে মধ্যে রক্ত দাড়িম্ব বীজের মত তাহার নৈসর্গিক দন্তগুলির মধ্যে কৃত্রিম স্বর্ণদন্ত অবকাশ পূর্ণ করিতেছে। ঈষৎ চুজ দেহে সামর্থ্যের অভাব নাই। বামহস্তে যে দীর্ঘ তরবারি তিনি, দৃঢ়ভাবে ধরিয়া আছেন, তাহা এখনও যেন রণক্ষেত্রে শত্রুশোনিত লোলুপ।