8 শ্ৰীকান্ত শ্ৰীকান্ত ? আচ্ছা । বলিয়া সে তাহার পকেট হইতে সিগারেট ও দেশলাই বাহির করিয়া, ধরাইয়া ফেলিল। চারিদিকে লোক —প্রশ্ন করিলাম, চুরুট খাওয়া কেউ যদি দেখে ফেলে ? ফেললেই বা ! সবাই জনে । বলিয়া সে চলিয়া গেল । তারপরে মাস-খানেক গত হইয়াছে। সেদিনের রাত্রিটা যেমন গরম তেমনি অন্ধকার । কোথাও গাছের একটী পাত৷ পর্যন্ত নড়ে না। ছাদের উপর সবাই শুইয়া ছিলাম। বারোট। বাজে, তথাপি কাহারে চক্ষে নিদ্র। নাই। হঠাৎ কি মধুর ংশীস্বর কানে আসিয়া লাগিল । সহজ রামপ্রসাদী সুর । কত ত শুনিয়াছি, কিন্তু বাশতে যে এমন মুগ্ধ করিয়া দিতে পারে তাহা জানিতাম না। বাড়ীর পূর্ব-দক্ষিণকোণে একটা প্রকাণ্ড আম-কঁঠালের বাগান। ভাগের বাগান, অতএব কেহ খোঁজখবর লইত না । সমস্ত নিবিড় জঙ্গলে পরিণত হইয়া গিয়াছিল। শুধু গরু বাছুরের যাতায়াতে সেই বনের মধ্য দিয়ে সরু একটা পথ পড়িয়াছিল। মনে হইল, যেন সেই বনপথেই বাশীর সুর ক্রমশঃ নিকটবৰ্ত্তী হইয়া আসিতেছে। পিসিমা উঠিয়া বসিয়া, তাহার বড়ছেলেকে উদ্দেশ করিয়া কহিলেন, হা রে নবীন, বাঁশী বাজায় কি রায়েদের ইন্দ্র না কি ? বুঝিলাম, ই হারা সকলেই ওই বংশীধারীকে চেনেন। বড়দা বলিলেন, সে হতভাগা ছাড়া এমন: বাশীই বা বাজাবে কে, আর ঐ বনের মধ্যেই বা ঢুকবে কে ? বলিস কি রে? ও কি গোসাইবাগানের ভেতর দিয়ে আসচে না কি ? বড়দা বলিলেন, হু ।
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।