Sbro শ্ৰীকান্ত পারিলাম না। তখন ঘোর অমাবস্যা । সুতরাং খেলা স্বরু হইবার আর বেশী দেরি নাই আশা করিয়া, একটা বালুর ঢিপির উপর গিয়া চাপিয় বসিলাম । বন্দুকটা খুলিয়া, টোটাট। আর একবার পরীক্ষা করিয়া, পুনরায় যথাস্থানে সন্নিবিষ্ট করিয়া, কোলের উপর রাখিয়া প্রস্তুত হইয়া রহিলাম। হায় রে টোটা ! বিপদের সময় কিন্তু সে কোনই সাহায্য করিল না । পিয়ারীর কথাটা মনে পড়িল । সে বলিয়াছিল, যদি অকপটে বিশ্বাসই কর না তবে কৰ্ম্মভোগ করিতে যাওয়া কেন ? সত্যই ত ! এ কি দেখিতে আসিয়ছি ? মনের অগোচর ত পাপ নাই । আমি কিছুই দেখিতে আসি নাই ; শুধু দেখাইতে আসিয়াছি— আমার সাহস কত । সকালে যাহার বলিয়াছিল, ভীরু বাঙ্গালী কার্যাকালে ভাগিয়া যায়, তাহদের কাছে শুধু এই কথাটা সপ্রমাণ করা যে, বাঙ্গালী বড় বীর । হঠাৎ একটা দমকা বাতাস কতকগুলা ধূলা-বালি উড়াইয়। গায়ের উপর দিয়া বহিয়া গেল ; এবং সেটা শেষ না হইতেই, আর একট। এবং আর একটা বহিয়া গেল। এই দমক বাতাসটা শুধু ধূলা বালিই উড়াইল না, আমার মজ্জগত গোপন-সংস্কারে গিয়া ও ঘা দিল । ক্রমশঃ ধীরে ধীরে বেশ একটু জোরে হাওয়া উঠিল । অনেকেই হয় ত জানেন না যে মড়ার মাথার ভিতর দিয়া বাতাস বহিলে ঠিক দীর্ঘশ্বাস ফেলা গোছের শব্দ হয়। দেখিতে দেখিতে আশে-পাশে, স্বমুখে, পিছনে দীর্ঘশ্বাসের যেন ছড়াছড়ি পড়িয়া গেল। ঠিক মনে হইতে লাগিল, কত লোক যেন আমাকে ঘিরিয়া বসিয়া, অবিশ্রাম হা-হুতাশ করিয়া নিশ্বাস
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১০২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।