শ্ৰীকান্ত 33 ফেলিতেছে ; এবং ইংরাজীতে যাহাক বলে 'uncanny feeling' ঠিক সেই ধরণের একটা অস্বস্তি সমস্ত শরীরটাকে যেন গোটা-দুই বাকানি দিয়া গেল। সেই শকুনির বাচ্চাট। তখনও চুপ করে নাই, সে পিছনে আরও বেশি করিয়া গোঙাইতে লাগিল। বুঝলাম, ভয় পাইয়াছি । এতকাণ্ডের মধ্যেও কিন্তু এ কথাটা ভুলি নাই যে, কোনমতেই আমার চৈতন্য হারাইলে চলিবে না । তাহ হইলে মরণ অনিবাৰ্য্য। দেখি, ডান প!-ট। ঠক ঠক্ করিয়া কঁাপিতেছে । থামাইতে গেলাম, থামিল না । সে যেন আমার পা নয় । ঠিক এমনি সময়ে অনেক দূরে অনেকগুল গলার সমবেত চীৎকার কানে পৌঁছিল—বাবুজা ! বাবুসাব ; সর্ববঙ্গ কট। দিয়া উঠিল । কাহার ডাকে ? আবার চীৎকার করিল—গুলি ছুড়বেন না যেন! শব্দ ক্রমশঃ অগ্রসর হইয়া আসিতে লাগিল —গোটা-দুই ক্ষীণ আলোর রেখাও আড়চোখে চাহিতে চোপে পড়িল । একবার মনে হইল, চীৎকারের মধ্যে যেন রতনের গলার আভাস পাইলাম। খানিক পরেই টের পাইলাম, সেই বটে। আর কিছুদূর অগ্রসর হইয়া, সে একটা শিমূলের আড়ালে দাড়াইয়া, চেচাইয়। বলিল, বাবু, আপনি যেখানেই থাকুন, গুলিটুলি ছুড়বেন না—আমরা রতন। রতন লোকট। যে সত্যই নাপিত, তাহাতে আর ভুল নাই। উল্লাসে চেচাইয় সাড় দিতে গেলাম, কিন্তু স্বর ফুটিল না । রতন এবং আরও তিনজন লোক গোটা-দুই লণ্ঠন ও লাঠিসোটা হাতে করিয়া কাছে আসিয়া উপস্থিত হইল। এই
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১০৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।