শ্ৰীকান্ত yed এমনি সূক্ষাতিসূক্ষ ব্যাখ্যা জুড়িয়া দিল যে, দিনের-বেল। এতগুলা লোকের মধ্যে বসিয়াও আমার পর্যন্ত মাথার চুল কটা দিয়া খাড়া হইয়া উঠিল । কাল সকালের মত আজও কখন যে পিয়ারা নিঃশব্দে আসিয়া বসিয়াছিল, তাহ লক্ষ্য করি নাই। গল্প শেষ হইলে সে উঠিয়া দাড়াইল এবং কুমারজাকে একটা সেলাম করিয়া অনুমতি লইয়। ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল । আজ সকালেই আমার বিদায় লইবার কথা ছিল । কিন্তু শরীরটা ভাল ছিল না বলিয়া, কুমারজার অনুরোধ স্বীকার করিয়া ও-বেলায় যাওয়া স্থির করিয়৷ নিজেদের তাঁবুতে ফিরিয়া আসিলাম । আজ দুপুর-বেলাট। আমার ঘুমাইয় পড়িবারই কথা ; বিছানায় পড়িয়৷ মাঝে মাঝে তন্দ্রা ও আসিতে লাগিল । এমনি করিয়া বেল গড়াইয়া গেল । বিছানা ছাড়ির বাহিরে আসিয়া দেখিলাম সূর্য অনেকখানি পশ্চিমে হেলিয়া পড়িয়ছে । খানিকট। দূরে অনেকখানি জল একসঙ্গে চোখের উপর ঝক ঝক করিয়া উঠিল । সে কোন একটা বিস্মৃত জমিদারের মস্ত কীৰ্ত্তি : দীঘিট। প্রায় আধ ক্রোশ দীর্ঘ। উত্তরদিকটা মজিয়া বুজিয়া গিয়াছে, এবং তাহ। ঘন জঙ্গলে সমাচ্ছন্ন। গ্রামের বাহিরে বলিয়। গ্রামের মেয়ের। ইহার জল ব্যবহার করিতে পারিত না । কথায় কথায় শুনিয়াছিলাম, এই দাঘিট যে কতদিনের এবং কে প্রস্তুত করিয়া দিয়াছিল, তাহ কেহ জানে না। একটা পুরাণে ভঙা ঘাট ছিল ; তাহারই একান্তে গিয়া বসিয়া পড়িলাম। এক সময়ে ইহারই চতুর্দিক ঘিরিয়া বর্কিত গ্রাম ছিল ; কবে নাকি
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১০৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।