শ্ৰীকান্ত ১২১ .কান বালাই নাই, শুধু রাত্রে মশার কামড়ের জ্বালায় মনে হইত— থাক মোক্ষসাধন । গায়ের চামড়া আর একটু মোটা করিতে না পরিলে ত আর বঁচি না ! সেদিন প্রাতঃস্নান করিয়া সাত্ত্বিকভোজনের চেষ্টায় বহির্গত হইতেছি, গুরুমহারাজ ডাকিয়৷ বলিলেন--- “ভরদ্বাজ মুনি বসহি প্রয়াগ মিনহি রামপদ অতি অনুরাগা—” অর্থাৎ স্ট্রাইক্ দি টেণ্ট—প্রয়াগ যাত্র করিতে হইবে । কিন্তু কাজ • সহজ নয় ; সন্ন্যাসীর মাত্র কি না ! প|-লীপ টাটু খুজিয়া আনিয়া বোঝাই দিতে, উটের উপরে মহারাজের জিন কসিয়া দিতে, গরুচাগল সঙ্গে লইষ্টে, পোটল। পাটলি বধিতে গুছাইতে একবেল গেল ! তার পরে রওনা হইয়। সন্ধ্যার প্রাক্কালে বিঠোঁর গ্রামপ্রান্তে এক বিরাট বটমূলে আস্তান ফেল হইল। কিন্তু সেই ভরদ্বাজ মুনির আস্তানায় পাছিতে যে কয় মাস লাগিবে, সে ত অনুমান করিতেই পারিলাম না। এই বিঠোর গ্রামের নামটা কেন আমার মনে আছে, তাহ এইখানে বলিব । সে দিনটা পূর্ণিমা তিথি। গুরু- আদেশে ভিক্ষার জন্য বাহির হইয়া পড়িয়াছিলাম , একটা বাড়ার খোল দরজার ভিতর দিয়া হঠাৎ একটি বাঙ্গালী মেয়ের চেহারা চোখে পড়িয়া গেল। ভাবিলাম, পাঁচ-ছয়দিন এই গ্রামে আচি, প্রায় সব ঘরেই গিয়াছি, কিন্তু বাঙ্গালী মেয়ে ত দূরের কথা—একটা পুরুষের চেহারাও ত চোখে পড়ে নাই। ভিতরে প্রবেশ করিতেই মেয়েট আমার পানে চাহিয়া রহিল। তাহার মুখখানি আমি আজও
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১২৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।