२२ শ্ৰীকান্ত কিছু না—সাপ ! শিহরিয়া নৌকার মাঝখানে জড়সড় হইয়া বসিলাম। অস্ফুটে কহিলাম, কি সাপ, ভাই ? ইন্দ্ৰ কহিল, সব রকম আছে । ঢোড়, বোড়, গোখরে, করেত –জলে ভেসে এসে গাছে জড়িয়ে আছে—কোথাও ডাঙl নেই দেখচিস্ নে ? সে ত দেখচি ৷ কিন্তু ভয়ে যে পায়ের নখ হইতে মাথার চুল পর্যন্ত আমার কাটা দিয়া রহিল । সে লোকটি কিন্তু ভ্ৰক্ষেপমাত্র করিল না, নিজের কাজ করিতে করিতে বলিতে লাগিল, কিন্তু কামড়ায় না। ওরা নিজেরাই ভয়ে মরচে—দুটো-তিনটে ত আমার গা-ঘেঁষে পালাল। এক একটা মস্ত বড়—সেগুলো বোড়াটোড় হবে বোধ হয়। আর কামড়ালেই বা কি করব । মরতে একদিন ত হবেই ভাই ! ওই লোকটি কি ! মানুষ ? দেবতা ? পিশাচ ? কে ও ? ভয় বলিয়৷ কোন বস্তু যে বিশ্বসংসারে আছে, সে কথা কি ও জানেও না ! বুকখানা কি পাথর দিয়ে তৈরী ? তবে যে সেদিন মাঠের মধ্যে সকলে পলাইয়া গেলে সে নিতান্ত অপরিচিত আমাকে একাকী নির্বির্বঘ্নে বাহির করিবার জন্য শক্রর মধ্যে প্রবেশ করিয়াছিল, সে দয়া মায়াও কি ওই পাথরের মধ্যে নিহিত ছিল ! আর আজ ? সমস্ত বিপদের বাৰ্ত্ত তন্ন তন্ন করিয়া জানিয়৷ শুনিয়া নিঃশব্দে অকুষ্টিতচিত্তে এই ভয়াবহ অতি ভীষণ মৃত্যুর মুখে নামিয়া দাড়াইল ; একবার একটা মুখের অনুরোধও করিল না—শ্ৰীকান্ত, তুই একবার নেমে যা । জীবন্মত্যুর মুখোমুখি দাড়াইয়৷ এই স্বার্থতাগ এই বয়সে কয়ট লোক করিয়াছে । ঐ
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।