‘88 শ্ৰীকান্ত ইন্দ্র খিলখিল করিয়া হাসিয়া উঠিয় কহিল, ও কিছু বলে না রে, বড় ভালমনুষ। ওর নাম রহিম । বলিয়া কাছে গিয়া তাহার পেট্রট ধরিয়া টানিয় উঠানের ওধারে সরাইয়া দিল । তখন নামিয়। আসিয়া ডান দিকে চাহিয়া দেখিলাম, সেই পর্ণকুটীরের বারান্দার উপরে বিস্তর ছেড়ে চাটাই ও ছোড়া কঁথার বিছানায় বসিয় একটা দীর্ঘকায় পাতলা-গোছের লোক প্রবল কাসির পরে তাপাইতেছে। তাহার মাথার জট উচু করিয়া বাধা, গলায় বিবিধ প্রকারের ছোট-বড় মাল । গায়ের জামা এবং পরণের কাপড় তা হস্ত মলিন এবং এক-প্রকার হলদে রঙে ছোপানে । তাহার লম্ব দাড়ি বস্ত্রখণ্ড দিয়া জটার সহিত বাধা ছিল বলিয়াই প্রথমটা চিনিতে পারি নাই ; কিন্তু কাছে আসিয়াই চিনিলাম সে সাপুড়ে। মাস পাঁচ-ছয় পূবেন তাহাকে প্রায় সপর্বত্রই দেখিতাম । আমাদের বাটাতেও তাহকে কয়েকবার সাপ খেলাইতে দেখিয়াছি । ইন্দ্র তাহাকে শাহ জী সম্বোধন করিল। তার পরে দুজনের মৃত্যুকণ্ঠে কথাবাৰ্ত্ত সুরু হইল। তাহার অধিকাংশ শুনিতেও পাইলাম না, বুঝিতেও পরিলাম না। কিন্তু এই একটা বিষয় লক্ষা করিলাম, শাহজী হিন্দিতে কথা কহিলেও ইন্দ্র বাঙলা ছাড়া কিছুই ব্যবহার করিল না । শাহ জাঁর কণ্ঠস্বর ক্রমেই উত্তপ্ত হইয়। উঠিতেছিল, এবং দেখিতে দেখিতে তাহ উন্মত্ত চিৎকারে পরিণত হইল । কাহাকে উদ্দেশ করিয়া সে যে এরূপ আকথা অশ্রাব্য গালি-গালজ উচ্চারণ করিতে লাগিল, তাহ তখন বুঝিলে, ইন্দ্র সহ্য করিয়াছিল বটে, কিন্তু আমি করিতাম না। তারপরে লোকটা বেড়ায় ঠেস্ দিয়া
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।