সাত্ত আজ একাকী গিয়া মুদার কাছে দাড়াইলাম। পরিচয় পাইয়৷ মুদী একটি ছোট স্যাকড় বাহির করিয়া গেরো খুলিয়া দুটি সোনার মাকৃড়ি এবং পাঁচটি টকা বাহির করিল। টাকা কয়টি আমার হাতে দিয়া কহিল, বহু মাকড়ি দুইটি আমাকে একুশ টাকায় বিক্রী করিয়া শাহ জাঁর সমস্ত ঋণ পরিশোধ করিয়া চলিয়া গিয়াছেন । কিন্তু কোথায় গিয়াছেন, তাহা জানি না। যাবার সময় বহুর হাতে সাড়ে পাচ আনা পয়স ছিল। অর্থাৎ বাইশটি মাত্র পয়সা অবলম্বন করিয়া এই নিরুপায় নিরাশ্রয় রমণী সংসারে সুদুৰ্গম পথে একাকী যাত্রা করিয়াছেন । তার পরে অনেক দিন ইন্দ্রকে আর দেখি নাই। গঙ্গার তীরে বেড়াইতে গেলেই দেখি, তাহার ডিঙ্গি কৃলে বাধা। জলে ভিজিতেছে, রৌদ্রে ফাটিতেছে। শুধু আর একটি দিনমাত্র আমরা উভয়ে সেই নৌকায় চড়িয়াছিলাম। সেই শেষ । তার পরে সেও আর চড়ে নাই, আমিও না। এই দিনটা আমার খুব মনে পড়ে। সেদিন কনকনে শীতের সন্ধা । আগের দিন খুব একপশলা বৃষ্টিপাত হওয়ায়, শীতটা যেন চের মত গায়ে বিধিতেছিল। হঠাৎ ইন্দ্র আসিয়া হাজির। কহিল,—তে থিয়েটার হবে, যাবি ? থিয়েটারের নামে একেবারেই লাফাইয়া উঠিলাম। ইন্দ্ৰ কহিল, তবে কাপড় পরে শিগগির আমাদের বাড়ী আয়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে একখানা র্যাপার টানিয়া লইয়া ছুটিয়া বাহির হইলাম।
পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।