পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

See चैकांङ् । কহিল, এ কি তুমি ছেলেখেলা মনে করা ? আমাকে একলা ফেলে রেখে চলে যাবে, চাকর বাকরেরাই বা কি ভাববো ? তুমি কি এদের কাছেও আমার মুখ রাখবে না ? ফিরিয়া দাড়াইয়া কহিলাম, তোমার চাকরদের সঙ্গে তুমি বোঝাপড়া ক’বো,-আমার সঙ্গে তার সম্বন্ধ নেই । তা না হয় হ’লো, কিন্তু ফিরে গিয়ে বন্ধুকেই বা আমি কি জবাব দেব ? এই জবাব দেবে যে, তিনি পশ্চিমে বেড়াতে গেছেন । এ কি কখনও বিশ্বাস কবে ? যাতে বিশ্বাস করে সেই রকম কিছু একটা বানিযে ব’লা । পিয়ারী ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিল, যদি অন্যায়ই একটা ক’রে থাকি, তার কি মাপ নেই ? তুমি ক্ষমা না। কবলে আমাকে আব্ব কে করবে ? বলিলাম, পিয়ারী, এগুলো যে দাসী-বাদীদেব মত কথা হচ্ছে । তোমার মুখে ত মানাচ্ছে না। এই বিদ্রেরূপের কোন উত্তৰ পিয়ারী সহসা দিতে পারিল না, আরক্তমুখে চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। সে যে প্ৰাণপণে আপনাকে সামলাইবাব চেষ্টা কবিতেছে, তাহা স্পষ্ট বুঝিতে পারিলাম। বাহির হইতে গাড়োয়ান উচ্চৈঃস্বরে বিলম্বের কারণ জিজ্ঞাসা কবিল। আমি নিঃশব্দে ব্যাগটা হাতে তুলিয়া লইতেই এবার পিয়ারী ধাপ, কবিয়া আমার পায়ের কাছে বসিয়া পড়িয়া রুদ্ধকণ্ঠে বলিয়া উঠিল, আমি যে সত্যিকার অপরাধ কখনো করতেই পারিনে, তা জেনেও যদি শাস্তি দিতে চাও, নিজ হাতে দাও, কিন্তু এই একবাড়ী লোকের কাছে আমার মাথা হেঁট করে দিয়ে না । আজ এমন ক’রে তুমি চ’লে গেলে আমি কারও কাছে আর মুখ তুলে দাড়াতে পারবো না । হাতের ব্যাগটা রাখিয়া দিয়া একটা চৌকিতে বসিয়া পড়িয়া কহিলাম, আচ্ছা, আজ তোমার-আমাৰ একটা শেষ বোঝাপড়া হয়ে যাক। তোমার আজকের আচরণ আমি মাপ করলুম। কিন্তু আমি অনেক ভেবে দেখেছি, দু’জনের দেখা-সাক্ষাৎ হওয়া আর চলবে না।