পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত Sto বলিলাম, আজ্ঞে না, যায়নি কিছুই । কিন্তু ভঁাহার ঔষধের মূল্য যখন দিতে পারিলাম না, তখন তিনি সমস্তই বুঝিয়া লষ্টলেন। স্তম্ভিতের ন্যায় কিছুক্ষণ দাড়াইয়া থাকিয়া জিজ্ঞাসা কবিলেন, ছিল কত ? যৎসামান্য । চাবিটা একটু সাবধানে রাখতে হয় বাবাজী। যাক, তুমি আমার পর নও, দামেব জন্যে ভেবো না, ভাল হও, তারপরে যখন সুবিধে হবে পাঠিয়ে দিয়েী, চিকিৎসাব কুটি হবে না-এই বলিয়া ডাক্তাববাবু পর্ব হইয়াও পরমাত্মীয়ের অধিক সা স্থানা দিয়া প্ৰস্থান কবিলেন । বলিলাম, একথা কেউ যেন না শোনে । ডাক্তারবাবু বলিলেন, আচ্ছা, আচ্ছা, সে বোঝা যাবে। পাড়াগায়ে বিশ্বাসের উপর্ব টাকা ধার দেওয়ার প্রথা নাই । টাকা কেন, শুধু হাতে একটা সিকি ধাবি চাহিলেও সবাই বুঝিবে, লোকটা নিছক তামাশা করিতেছে । কারণ, সংসারে এমন নির্বোধিও কেহ আছে, শুধু হাতে ধার চায়, এ কথা পাড়াগায়ের লোক ভাবিতেই পারে না ; সুতরাং আমি সে চেষ্টাও করিলাম না। প্ৰথম হইতেই স্থির করিয়াছিলাম এ কথা রাজলক্ষ্মীকে জানাইবা না । একটি সুস্থ হইলেই যাহা হয় করিব,- সম্ভবতঃ অভয়াকে লিখিয়া টাকা আনাইব, মনের মধ্যে এই সঙ্কল্প ছিল, কিন্তু সে সময় মিলিল না । সহসা যত্নের সুর তারা হইতে উদারায় নামিয়া পডিতেই বুঝিলাম, যেমন করিয়াই হােক, আমার বিপদটা বাটীর ভিতরে ठान्न अििङ •ाहे । অবস্থাটা সংক্ষেপে জানাইয়া রাজলক্ষ্মীকে একখানা চিঠি লিখিলাম বটে, কিন্তু নিজেকে এত হীন-এত অপমানিত মনে হইতে লাগিল যে, কোনমতে পাঠাইতে পারিলাম না, ছিড়িয়া ফেলিয়া দিলাম। পরদিন এমনি কাটিল। কিন্তু তাঁহার পরে আর কিছুতেই কাটিতে চাহিল না। সেদিন কোন দিকে চাহিয়া আবে কোন পথ দেখিতে না পাইয়া, অবশেষে একপ্রকার মরিয়া হইয়াই কিছু টাকার জন্য রাজলক্ষ্মীকে সমস্ত অবস্থা জানাইয়া খান-দুই পত্ৰ লিখিয়া পাটনা ও কলিকাতার ঠিকানায় পাঠাইয়া দিলাম।