পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত Rhy গেল, সাধুজী কহিতেছেন, দিদি, আমি ছোট্ট সন্ন্যাসী, আমাকে ও-নাম না। দিলেও চলে। কেবল নিজের কতকগুলো ভার ফেলে দিয়ে তার জায়গায় অপরের বোঝা তুলে নিয়েছি। রাজলক্ষ্মী কথা কহিল না, সাধু বলিতে লাগিলেন, আমি প্ৰথম থেকেই দেখতে পেয়েছি আপনি আমাকে ক্ৰমাগত ঘরে ফেরাবার চেষ্টা করছেন । কেন জানি নে বোধ হয় দিদি বলেই , কিন্তু এই যাদের ভার নিতে আমরা ঘর ছেড়ে বেবিয়েছি, এরা যে কত দুর্বল, কত রুগ্ন, কিরূপ নিরুপায়, এবং সংখ্যায় কত এ যদি একবার জানেন ত ও-কথা আর । भमe डाभॐ *द्रदम अीं । ইহারও রাজলক্ষ্মা কোনও উত্তর দল না ; কিন্তু আমি বুঝিলাম যে প্ৰসঙ্গ উঠিল, এইবার উভয়ের মন এবং মতের মিল হইতে বিলম্ব হইবে না । সাধুজীও ঠিক জায়গাতেই আঘাত করিলেন। দেশের আভ্যন্তরিক অবস্থা ইহার সুখ, ইহার দুঃখ, ইহার অভাব আমি নিজেও নিতান্ত কম জানি না; কিন্তু এই সন্ন্যাসীটি যেই হোন, তিনি এই বয়সেই আমার চেয়ে ঢের বেশি। ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখিয়াছেন এবং ঢের বড় হৃদয় দিয়া তাহাদিগকে নিজের করিয়া লইয়াছেন। শুনিতে শুনিতে চোখের ঘুম জলে পরিবত্তিত হইয়া উঠিল, এবং বুকের ভিতরটা ক্ৰোধে ক্ষোভে দুঃখে ব্যথায় যেন মথিত হইয়া যাইতে লাগিল । ও-গাড়ার অন্ধকার কোণে একাকী বসিয়া রাজলক্ষ্মী একটা প্রশ্নও করিল না, একটা কথাতেও কথা যোগ করিল না। তাহার নীরবতায় সাধুজী কি ভাবিলেন তাহা তিনিই জানেন, কিন্তু এই একান্ত স্তব্ধতার পরিপূর্ণ অর্থ আমার কাছে গোপন রহিল না। দেশ বলিতে যেথায় দেশের চৌদ্দ আন নর-নারী বাস করেন, সেই পল্লীগ্রামের কাহিনীই সাধু বিবৃত করিতে লাগিলেন। দেশে জল নাই, প্ৰাণ নাই, স্বাস্থ্য নাই-জঙ্গলের আবর্জনায় যেথায় মুক্ত আলো ও বায়ুর পথ রুদ্ধ, যেথায় জ্ঞান নাই, বিদ্যা নাই, ধৰ্ম্ম যেথায় বিকৃত, পথভ্ৰষ্ট, মৃতকল্প, জন্মভূমির সেই দুঃখের বিবরণ ছাপার অক্ষরেও পড়িয়াছি, নিজের চোখেও দেখিয়াছি ; কিন্তু এই না-থাকা যে কত বড় না-থাকা, মনে হইল আজিকার পূবেৰ তাহা যেন জানিতামই না । দেশের এই দৈন্য যে কিরূপ ভয়ঙ্কর