পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

qțV r রতন চোখ রাঙাইয়া কহিল, তোরা কি জানিস? তাকে হাসপাতালে। ਚ , কিন্তু খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। গেল কোথা ? তোদের সুদ্ধ হাতে দড়ি পরাতে পারে জানিস? শুনিয়া সকলের মুখ শুকাইল । কেহ কেহ সরিবার চেষ্টাও করিল। রাজলক্ষ্মী রতনের প্রতি কঠিন দৃষ্টিপাত করিয়া কহিল, তুই ও-ধারে দাড়াগে যা। যখন জিজ্ঞাসা করবো বলিস। ভীড়ের মধ্যে মালতীর বুড়ো বাপ পাংশুমুখে দাড়াইয়া ছিল ; আমরা সবাই তাহাকে চিনিতাম, ইঙ্গিতে কাছে ডাকিয়া প্রশ্ন করিল, কি হয়েছে, সত্যি বল ত বিশ্বনাথ ! লুকালে কিংবা মিছা কথা কইলে বিপদে পড়তে পারে । বিশ্বনাথ যাহা কহিল তাহ সংক্ষেপে এইরূপ : কাল রাত্ৰি হইতে মালতী তাহার পিতার বাটীতে ছিল। আজ দুপুর-বেলা সে পুকুরে জল আনিতে গিয়াছিল। তাহার স্বামী নবীন কোথায় লুকাইয়া ছিল, একাকী পাইয়া বিষম প্ৰহার করিয়াছে’-এমন-কি মাথা ফাটাইয়া দিয়াছে। মালতী কঁদিতে কঁাদিতে প্ৰথমে এখানে আসে, কিন্তু আমাদের দেখা না পাইয়া কুশারী মহাশয়ের সন্ধানে কাছারী-বাটীতে যায়, সেখানে তঁাহারও সাক্ষাৎ না পাইয়া সোজা থানায় গিয়া সমস্ত মার-ধোরের চিহ্ন দেখাইয়া পুলিশ সঙ্গে করিয়া আনিয়া নবীনকে ধরাইয়া দেয়। সে তখন ঘরেই ছিল, নিজের হাতে দুটাে চাল সিদ্ধ করিয়া খাইতে বসিতেছিল, সুন্দরাং পলাইবার সুযোগ পায় নাই। দারোগাবাবু লাথি মারিয়া ভাত ফেলিয়া দিয়া তাহাকোিৰ্বাধিয়া লইয়া গিয়াছে। ব্যাপার শুনিয়া রাজলক্ষ্মী অগ্নিমূৰ্ত্তি হইয়া উঠিল। সে মালতীকে যেমন দেখিতে পারিত না। নবীনের প্রতিও তেমন প্ৰসন্ন ছিল না । কিন্তু তাহার সমস্ত রাগ পড়িল গিয়া আমার উপরে। ক্রুদ্ধকণ্ঠে বলিল, তোমাকে একশো-বার বলেছি ছোটলোকদের এ-সব নোঙর কাণ্ডের মধ্যে তুমি যেয়ে না । যাও এখন সামলাও গে-আমি কিছু জানি নে। এই বলিয়া সে আর কোন দিকে দৃষ্টিপাত না করিয়া দ্রুতপদে বাটীর ভিতরে চলিয়া গেল। বলিতে বলিতে গেল, নিবনের ফাঁসি হওয়াই উচিত। অার ও-হারামজাদী যদি মরে থাকে ত আপদ গেছে।