পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত a 0. কহিলাম, দেখুন, এর চেয়ে বরঞ্চ আপনার মনিব-ঠাকরুণকে জানাবেন, তিনি হয়ত সকল কথা বুঝতেও পারবেন, আপনার উপকার করতেও পাববেন । তিনি মাথা নাড়িয়া বলিয়া উঠিলেন, আর আমি কাউকে বলতেও চাই নে, আমার উপকার ক’রেও কারও কাজ নেই। এই বলিয়া তিনি সহসা অঞ্চলে চোখ মুছিয়া বলিলেন, আগে আগে কৰ্ত্তা বলতেন, দু’মাস যাক, আপনিই ফিরে আসবে। তারপরে সাহস দিতেন; থাকো না আরও মাসদুই চেপে, সব শুধরে যাবে-কিন্তু এমনি ক’বে মিথ্যে আশায় আশায় প্ৰায় বছর ঘুরে গেল ; কিন্তু কাল যখন শুনলাম সে উঠানের দুটাে বেগুন পৰ্যন্ত বেচিতে পেরেছে, তখন কারওঁ কথায় আর আমার কোন ভরসা নেই। হতভাগী সমস্ত সংসার ছারখার ক’রে দেবে, কিন্তু ও-বাড়ীতে আর পা দেবে। না। বাবু, মেয়েমানুষ যে এমন শক্ত পাষাণ হ’তে পারে, আমি স্বপ্নেও vestfolfo ! তিনি কহিতে লাগিলেন, কৰ্ত্তা ওকে কোনদিন চিনতে পারেন নি, কিন্তু আমি চিনেছিলাম। প্ৰথম প্রথম এর-ওর-তার নাম ক'রে লুকিয়ে লুকিয়ে জিনিস-পত্ৰ পাঠাতাম, উনি বলতেন, সুনন্দ জেনেশুনেই নেয়-কিন্তু আমন করলে তাদের চৈতন্য হবে না । আমিও ভাবতাম হবেও বা । কিন্তু একদিন সব ভুল ভেঙ্গে গেল। কি ক’রে সে জানতে পেরে যতদিন যা কিছু দিয়েছি, একটা লোকের মাথায় সমস্ত টান মেরে আমাদের উঠানের মাঝখানে ফেলে দিয়ে গেল। তাতে কৰ্ত্তার তবুও চৈতন্য হ’ল না-হ’ল আমার । এতক্ষণে আমি তার মনের কথাটা ঠিক বুঝতে পারলাম। সদয়কণ্ঠে কহিলাম, এখন আপনি কি করতে চান ? আচ্ছা, তঁরা কি আপনাদের বিরুদ্ধে কোন কথা বা কোনপ্রকার শত্ৰুতা করবার চেষ্টা করেন ? কুশারীগৃহিণী আর একদফা কঁাদিয়া ফেলিয়া কপালে করাঘাত করিয়া কহিলেন, পোড়া কপাল। তা হ’লে তা একটা উপায় হ’ত । সে আমাদের এমুনি ত্যাগ করেছে যে কূেনদিন যেন আমাদের চােখেও দেখেনি, নামও শোনেনি, এমনি কঠিন এমনি পাষাণ মেয়ে। আমাদের দুজনকে মুনুন্দ৷