পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত እweb” ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া ধীরে ধীরে বলিতে লাগিল, ভোর হলে উঠে এলুম। ভাগ্যে কুম্ভকর্ণের নিদ্ৰা ভাঙ্গে না, নইলে লোভের বশে তোমাকে জাগিয়ে ফেলেছিলুম। আর কি। তারপর দরওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে গঙ্গা নাইতে গেলুম-মা যেন সব তাপ মুছে নিলেন। বাড়ী এসে আহ্নিকে বসলুম, দেখতে পেলুম তুমি কেবল একাই ফিরে আসো নি, সঙ্গে ফিরে এসেছে আমার পুজোর মন্ত্ৰ ! এসেছেন আমার ইষ্টদেবতা, গুরুদেব-এসেছে আমার শ্রাবণের মেঘ। আজও চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগলো, কিন্তু সে আমার বুকের রক্তনেঙড়ানো অশ্রু নয়, আমাব আনন্দেব উপচে-ওঠা ঝর্ণার ধারা— আমাব সকল দিক ভিজিয়ে দিয়ে ভাসিয়ে দিয়ে বয়ে গেল। আনি গে। দুটো ফল ? বঁটি নিয়ে কাছে বসে নিজের হাতে বানিয়ে, অনেকদিন তোমায় খেতে দিই নি-যাই ? কেমন ? Ne রাজলক্ষ্মী তেমনই দ্রুতবেগে প্ৰস্থান করিল। আমাব আবাব নিঃশ্বাস পড়িল । এ আর সেই কমললতা ! কি জানি কে উহার জন্মকালে সহস্ৰ নামের মধ্যে বাছিয়া তাহাব রাজলক্ষ্মী নাম দিয়াছিল ! দুজনে কালীঘাট হইতে যখন ফিরিয়া আসিলাম, তখন রাত্রি নটা। রাজলক্ষ্মী স্নান করিয়া, কাপড় ছাড়িয়া সহজ মানুষের মতো কাছে আসিয়া বসিল । বলিলাম, রাজপোষাক গেছে-কঁচলাম । রাজলক্ষ্মী ঘাড় নাড়িয়া বলিল, ও আমার রাজপোষাকই বটে, কিন্তু রাজার দেওয়া যে ? যখন মরবো ঐ কাপড়খানা আমাকে পরিয়ে দিতে ব’লো । তাই হবে ; কিন্তু সারাদিন ধরে আজ কি তুমি শুধু স্বপ্ন দেখেই কাটাবে ? এইবার কিছু খাও।