পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ğAQfg ty ভাগ্যে এমন সব নমুনা কদাচিৎ চোখে পড়ে ; না হইলে ৰহু পূর্বেই সংসারটা রীতিমত একটা পুলিশ-থানায় পরিণত হইয়া যাইত। কিন্তু যাক সে কথা ! কিন্তু ভগবানও যে র্তাহার উপর ক্রুদ্ধ হইয়াছিলেন, সে খবরটা পাঠককে দেওয়া আবশ্যক । এ অঞ্চলে পথ-ঘাট, দোকান-পত্র সমস্তই ইন্দ্রের জানা ছিল। সে গিয়া মুদির দোকানে উপস্থিত হইল। কিন্তু দোকান বন্ধ এবং দোকানী শীতেবা ভয়ে দরজা-জানালা রুদ্ধ করিয়া গভীর নিদ্রায় মগ্ন । এই গভীরতা যে কিরূপ অতলস্পর্শী, সেকথা যাহার জানা নাই, তাহাকে লিখিয়া বুঝানো যায় না । ইহারা অমরোগী “নিকর্ম জমিদারও নয়, বহুভারাক্রান্ত কন্যাদায়গ্ৰস্ত বাঙালী গৃহস্থও নয় । সুতরাং ঘুমাইতে জানে। দিনের বেলা খাটিয়া-খুটিয়া রাত্ৰিতে একবার ‘চারপাই’ আশ্ৰয় করিলে ঘরে আগুন না দিয়া, শুধুমাত্ৰ চেঁচামেচি ও দোরনাভানাডি করিয়া জাগাইয়া দিব, এমন প্ৰতিজ্ঞা যদি স্বয়ং সত্যবাদী অজুন জয়দ্ৰথ-বধের পরিবর্তে করিয়া বসিতেন, তবে তঁাহাকে মিথ্যাপ্ৰতিজ্ঞাপাপে দগ্ধ হইয়া মরিতে হাইতি, তাহা শপথ কবিয়া বলিতে পারা Xf3 তখন উভয়েই বাহিরে দাড়াইয়া তারস্বরে চিৎকার করিয়া এবং যত-প্ৰকার ফন্দি মানুষের মাথায় আসিতে পারে, তাহার সবগুলি একে একে চেষ্টা করিয়া আধঘণ্টা পরে রিক্ত হস্তে ফিরিয়া আসিলাম । কিন্তু ঘাট ষে জনশূন্য। জ্যোৎস্নালোকে যতদূর দৃষ্টি চলে, ততদূরই যে শূন্য। দর্জিপাড়া’র চিহ্নমাত্র কোথাও নাই। ডিঙি যেমনি ছিল, তেমনি রহিয়াছে-ইনি গেলেন কোথায় ? দু’জনে প্ৰাণপণে চীৎকার করিলামনতুনদা ও নতুনদা। কিন্তু কোথায় কে। ব্যাকুল আহবান শুধু বাম ও দক্ষিণের সু-উচ্চ পাড়ে ধাক্কা খাইয়া অস্পষ্ট হইয়া বারম্বার ফিরিয়া আসিল । এ অঞ্চলে মাঝে মাঝে শীতকালে বাঘের জনশ্রুতিও শোনা যাইত। গৃহস্থ কৃষকেরা দলবদ্ধ হুড়ার'-এর জ্বালায় সময়ে সময়ে ব্যতিব্যস্ত হইয়া উঠিত। সহসা ইন্দ্ৰ সেই কথাই বলিয়া বসিল, বাঘে নিলে না তা রে ; ভয়ে সর্বাঙ্গ কঁাটা দিয়া উঠিল-সে কি কথা। ইতিপূর্বে র্তাহার নিরতিশয় অভদ্র