পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& ዩኃ শ্ৰীগৌর উপদেশামুত দান করিয়াছেন। কিন্তু এখন আমরা সে সৌভাগ্যলাভে বঞ্চিত। এখন আমাদিগকে ডাকিয়া চাহিয়া লইতে হইবে। যদি বলেন, চাহিয়া লইব তবে তিনি কিসের দাতা শিরোমণি ? ভাই ! আকাশে পূৰ্ণশশীর উদয় হইলে চন্দ্ৰকিরণ প্ৰাসাদ-পৰ্ণশালা সর্বত্রই সমতাবে আলোকিত করে ; কিন্তু যে ব্যক্তি জ্যোৎ মাকে দু’চক্ষের বিষ বলিয়া ঘরের ভিতর দ্বারারুদ্ধ করিয়া বসিয়া থাকে-জ্যোৎসাকে নিন্দ করাই যাহার মজ্জাগত অভ্যাস, বল দেখি, সে হতভাগ্য কি কখন সুধাংশুর স্নিগ্ধ-মাধুরী উপলব্ধি করিতে পারে ? তাই বলি, ভাই, হৃদয়গত কুসংস্কার অপসারিত কর। ভুবন পাবন শ্ৰীগৌর ভগবানের কৃপা কণা লাভের জন্ত কাতর প্রাণে প্রার্থনা কর—প্রাণ খুলিয়া ভালবাসার হৃদয় লইয়া “হ প্ৰাণ গৌরাঙ্গ” বলিয়া ডাক। ভাই, যে যত বড় মহাপাপী সে তত অধিক প্রভুর করুণাপাত্ৰ। আহা! এমন পাপীর সহায় দয়ার ঠাকুর আর ব্ৰহ্মাণ্ড খুজিয়া পাইবে না ?-- “হেন অবতার ভাই, নাই কোন যুগে। কোন অবতারে সে পাপীর পাপ মাগে ।।’’ দয়াল শ্ৰীগৌরাঙ্গের করুণা যেমন অসীম, তাহার লীলাও সেইরূপ অমানুষী ও অচিন্ত্য। তিনি বৈষ্ণব দেখিলেই তঁহার সহিত শাস্ত্ৰ যুদ্ধ করিতেন। বৈষ্ণবের উপরেই যেন তঁহার অধিক আক্রোশ। প্রভুর লীলায় ইহা এক অপূৰ্ব ব্যাপার! লীলার সুচনাতেই পাছে প্ৰভু সেবকগণের নিকট প্রকাশ হইয় পড়েন বোধ হয়, সেইজন্য সেবকগণের সহিত অধিক চাঞ্চল্য প্ৰকাশ করিতেন। যদিও “লুকাইতে নারে প্রভু ভক্তগণ স্থানে”। তথাপি শ্ৰীভগবানের ইচ্ছা বুঝিবার কাহারও শক্তি নাই । “ঈশ্বরে সে আপনারে না জানায়ে যাবে। লক্ষনীও জানিতে শক্তি না ধরেন তবে ৷ শ্ৰীচৈঃ ভাঃ ॥ ভাই, ভগবদ্ভক্ত মহাত্মগণও প্রভুর মায়ায় বিমোহিত হইয়া সৰ্ব্বদা ভাবিতেন-“আহা ! এমন লোকলিলাল দিব্য শরীর-এমন কোটি কন্দৰ্প নিন্দি রূপমাধুরী-এমন বৃহস্পতি-বিজয়ী পাণ্ডিত্য প্রতিভা, ইহঁতে কৃষ্ণ প্ৰেমারস নাই ; কি ক্ষোভের বিষয় । ইহঁতে যদি কৃষ্ণভক্তিরাসামৃত সঞ্চারিত হয়। তাহা হইলে এ বস্তুটী না জানি কি মধুরই না হয়।”- এই ভাবিয়া প্রভুর কৃষ্ণ ভক্তির জন্য কাব্য মনোবাক্যে শ্ৰীভগবানের নিকট প্রার্থনা করিতেন। 歌