পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লীলামাহাত্ম্য। s নবম প্রবাহ। প্ৰেমাবতার শ্ৰীগৌরাঙ্গ সংসার-দাবানল-দগ্ধ জগজীবের শান্তিবিধানের নিমিত্ত করুণাধারাববধ জলদ স্বরূপ। শুষ্কন্ধৰ্ম্মের উত্তপ্ত সৈকত প্ৰান্তরে দয়াল প্ৰভু, ভক্তির স্নিগ্ধ-ধারা বর্ষণ করিলেন, আর আমনি তাহ শত শত ভক্তের প্রাণকে রসাইয়া গলাইয়া স্রোতস্বিনীর ন্যায় শক্তিলাভে আনন্দেয় তরঙ্গ তুলিয়া তরতার বেগে প্রবাহিত হইল। সেই অমিয়-শীতল ভক্তি-প্রবাহে জীবজগতের দুঃখ দুর্ভোগ ক্রমশঃ ভাসিয়া যাইতে লাগিল । কিন্তু যে নিবিড় জলদের অপার করুণা-ধারা-সম্পাতে এরূপ অভাবনীয় সুখ-শাস্তির তরঙ্গ উঠিল-সেই ব্রজের জলদ-শ্যামই যে শ্ৰীনবদ্বীপে শ্ৰীশচীনন্দন নিমাই পণ্ডিত রূপে বিদ্যাবিলাস-রিঙ্গে বিভোর, তাহ কেহই তখন জানিতে বা বুঝিতে পারিল না। প্রভুর মায়ানাটে বিমোহিত হইয়া তখন ভক্ত ও অভক্ত সকলেই প্রভুকে একজন প্রতিভাসম্পন্ন পণ্ডিত মনে করিতে লাগিলেন। প্রভু শিশুকালে ব্যাকরণ মাত্র অধ্যয়ন করিয়াছেন। কিন্তু তাহাতেই তিনি বড় বড় পণ্ডিতকে বিদ্যাবিচারে পরাস্ত করেন । একদিন প্ৰভু শিষ্যগণ সঙ্গে নগর ভ্ৰমণ করিতেছেন এমন সময় মুকুন্দের সহিত সাক্ষাৎ হইল। মুকুন্দের হাতে ধরিয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন “আমারে দেখিয়া তুমি কি কাৰ্য্যে পলাও । আজি আমা প্ৰবোধিয়া বিনা দেখি যাও ৷” চৈঃ ভাঃ । ১৭ ৷৷ মুকুন্দ বড়ই বিব্রত হইলেন। ভাবিলেন-“তইতো, আজ কেমন করিয়া ইহার হাতত এড়াইব । তবে নিমাই ব্যাকরণ মাত্ৰ পড়িয়াছেন, উহাকে অলঙ্কার জিজ্ঞাসা করিয়া পরাভব করিব।” এই ভাবিয়া মুকুন্দ বলিলেন - “পণ্ডিত ! ব্যাকরণ শিশুশাস্ত্ৰ, ইহা বালকদেরই বিচাৰ্য্য । অতএব তোমার সঙ্গে অলঙ্কারের বিচার করিব।” প্ৰভু বলিলেন “-বুঝ তোর যেবা লয় মনে।” চৈঃ ভাঃ।। ১৮ ৷৷ অর্থাৎ তোমার যাহা অভিরুচি তাহাই জিজ্ঞাসা কর।” এই কথা শুনিয়া মুকুন্দ বাছিয়া বাছিয়া কবিতালঙ্কার জিজ্ঞাসা করিলেন। সৰ্ব্বশক্তিময় শ্ৰীগৌরচন্দ্ৰ তাহার বিচার পূর্বক খণ্ডন করিয়া তাহাতে ভুরিভুরি দোষ দেখাইলেন। মুকুন্দ সে খণ্ডন আর স্থাপন করিতে পারিলেন না, হারি মানিলেন। তখন প্ৰভু হাসিয়া হাসিয়া বলিলেন