পাতা:শ্রীবৃহদ্ভাগবতামৃত.djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিম্বা বিষজলহুদে আমারে পড়িতে । যত্বে সখীগণ করিবেক নিবারিতে ॥ এত ভাবি একাকী সে হ্রদতীরে গিয়া । শীঘ্ৰ কৃষ্ণ কদম্ববৃক্ষেতে আরোহিয়৷ ৷ বেগে লম্ফ দিয়া হ্রদজলে পড়িলেন । জলসব উপরে নিঃসার করিলেন। জলে সপ্তরিয়৷ বহু বিচিত্র বিলাস । জলশব্দ বহুবিধ করিল সহাল । তাহে খল কালিয় হইয়া উপস্থিত। করিলেক নিজদেহে কৃষ্ণেরে বেষ্টিত ॥ তাহাতে কৌতুকী কৃষ্ণ দশা আপনার । অনির্বচনীয় দেখাইলেন বিস্তার ॥ সহসা গমনকারী কুষ্ণে না দেখিয়া । কৃষ্ণলখাগণ মৃতপ্রায় সে হইয়া ॥ সৰে তার অন্বেষণে হইয়া কাতর। দেখি পদচিহ্ন হ্রদে গেলেন সত্বর ॥ দেখিলেন কালিয়ের শরীরে বেষ্টিত। কৃষ্ণচন্দ্ৰ নাছি কিছু করেন চেষ্টিত ॥ বয়স্যসকল তাহে হৈলা মোহগত । স্পন্দনবিহীন রছিলেন জ্ঞানহত ॥ বন-আচ্ছাদনে যারা না পায় দশন । নাহি ইচ্ছা করে তারা রাখিতে জীবন ॥ ধেস্থ বৃষ বৎস মহিষাদি গ্রাম্য আর । বনজাত পশুবৰ্গ আদি কুষ্ণসার ॥ সবে কুষ্ণবদনেতে অপিয়া নয়ন। ভীরে থাকি আৰ্ত্তনাদে করয়ে ক্রনন । উচ্চৈঃস্বরে রোদনে বিকল পক্ষিগণ । বেগে উড়ি হ্রদমধ্যে হয় ত পতন ॥ শুষ্ক হৈল বৃক্ষণদিক নিশ্চয় সেক্ষণে । ত্ৰিবিধ উৎপাত মহা ছৈল প্রকাশনে ॥ এক বৃদ্ধে প্ৰভু কৈলা মনেতে প্রেরণ ব্ৰজমধ্যে ধাবমান গেল সেই জন ॥ হাহা মহারব করি মুঘোর কান্দিয়া । সে-সব বৃত্তান্ত ব্ৰজে কহিলেক গিয়া৷ . বৃদ্ধ আগমন-পূৰ্ব্বে মহত উৎপাত। রক্তবৃষ্টি ভূকম্পাদি ভয়ঙ্কর জাত ॥ দেখিয়া শ্রীনন্দ-যশোমতী-আদি যত । ব্ৰজবাসিসবে হৈলা সভ্রম-সঙ্গত ॥ ব্রজের মঙ্গল কৃষ্ণ—র্তার অন্বেষণে । ব্ৰজে হৈতে বাহির হইয়াছে সৰ্ব্বজনে ॥ পুন সেই বৃদ্ধ ভগ্নকণ্ঠে স্বর করি । হুদে মগ্ন সর্পবেষ্ট কহিল বিৰরি ॥ জীবৃহত্তাগৰতামৃত 2 of শুনি সে বৃত্তান্ত যত ব্রজবাসিগণ । বজ্রপাতগম সবে করিল মনন ॥ নিজ অভুজের প্রভাবজ্ঞ বলরাম । আপনার গৃছে স্থিত জানি সবকাম ॥ "ইহা মিথ্যা মিথ্যা" এই উচ্চশব্দ করি । রোহিণীমাতাকে যত্নে প্রবোধ আচরি৷ গৃহরক্ষাহেতু তারে নিয়োগ করিয়া । সৰ্ব্ব ব্ৰজজনে শাস্তকরণ লাগিয়া ॥ মৃতপ্রায় সকলেরে অগ্ৰেতে ধাবিত। ধাইয়া মিলিলা রাম তাদের সহিত ॥ শীঘ্র সেই হ্রদে রাম আলিয়। তখন। অমুজে তাদৃশ দশা করি নিরীক্ষণ ॥ ভাইর প্রেমেতে অতি স্বকাতরমন । ধৈর্য্য না রক্ষিতে পারি করিলা রোদন ॥ বিবিধ বিলাপ বলরাম সে করিল। কাষ্ঠপাষাণাদি-ভেদ যাহাতে হইল ॥ পূৰ্ব্বে নন্দ-যশোমতী মূচ্ছ1 হৈলা যেন । বলরাম মূচ্ছিত হইলা ক্ষণে তেন ॥ তবে সে-সকলে আর যত প্রাণিগণ । অতি মহাউচ্চৈঃস্বরে করয়ে রোদন ॥ অতি আৰ্ত্তিনাদে তাহা হইল পূরিত। বিশ্বের রোদন যাহা হৈতে প্রকাশিত ॥ সেই মহানাদে রাম পাইয়া স্বজ্ঞান। যত্বে ধীরশিরোমণি হৈলা ধৈৰ্য্যবান ॥ যশোমতী-নন্দ সংজ্ঞা ক্ষণেকে পাইয়া । তাদৃশ অবস্থা হ্রদে কৃষ্ণেরে দেখিয়া ॥ উচ্চে কান্দি বেগে হ্রদে করে প্রবেশন। বলরাম দুইকরে করিলা রোধন ॥ মৃত্যুতুল্য মূৰ্ছিত দেখিয়া ব্ৰজজনে । হৈলা রাম অতি ব্যথাযুক্ত নিজমনে । সুন্দর গদশদ স্বর করিয়া তখন । কৃষ্ণ সম্বোধিয়া উচ্চে কহেন কথন— পার্ষদ বৈকুণ্ঠবাসী এসকল নয় । অযোধ্যানিবাসী নহে এ বানরচয় ॥ দ্বারকানিবাসী এই নহে ত যাদব। গোলোকনিবাসী হয় এই জনগব ॥ বৈকুণ্ঠাদিবাসী পারে বিরহ সহিতে । কৃষ্ণের প্রভাব তারা সদা ভাবে চিতে ॥ এ গোলোকবাসী তোমাগত সে জীবন । পরম প্রেমেতে মগ্ন-মন সৰ্ব্বক্ষণ ॥ আমি আর রক্ষিবারে নারিয়ে এখন । দেখিয়া এ দশা তৰ মরে সর্বজন ।