পাতা:শ্রীবৃহদ্ভাগবতামৃত.djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনাথ বালক হয়ে যদি বৈসে বলে। সেই বনে জীয়ে যদি রাখে নারায়ণে। বন্ধুগণে রাখে যারে ঘরের ভিতরে। প্রভু যদি না রাখিব লেহ মরে ঘরে। কৰ্ম্মফলে এক হেতে একের জনম । দৈবযোগে একে হৈতে একের মরণ ॥ শরীরে শরীর স্বজি শরীরে মারয় । জীবের তাহাতে কিছু নাহি অপচয় ॥ কাষ্ঠে হৈতে যেন ভিন্ন দেখিয়ে আনল। এইরূপ ভিন্ন জীৰ ভিন্ন কলেবর ॥ কাহার কারণে শোক কর এত বড় । স্বপন সদৃশ দেখ অসত্য সকল । আর এক কথা কহি স্থির কর চিত্ত। অরণ্যে দেখিলে এক ব্যাধ আচম্বিত । [ সুযজ্ঞ না শুনে কিছু না করে উত্তর । ভূমিতে পড়িয়া আছে মর। কলেবর ] ॥ কাহার কারণে শোক করা এত বড় ৷ স্বপন সদৃশ দেখ অসত্য সকল। আর এক কথা কহি স্থির কর চিত্ত । অরণ্যে দেখিল এত ব্যাধ আচম্বিত । বিপিনে পাতিয়া জাল নানা পার্থী মারে। দেখিল কুলিঙ্গ দুই হেন অবসরে । অস্তব্যস্তে পাতিল বিষম জাল দড়ি । কুলিঙ্গ পড়িল তাথে লেভেতে ব্যাকুলী । তা-দেখিয়া কুলিঙ্গ আকুলচিত্ত হই । ভূমিতে পড়িয়া কন্দে দুঃখ শোক পাই ॥ কে নিল ঘরণী মোর সতী পতিব্ৰতা । কার সনে বঞ্চিব কহিব কারে কথা ॥ কি মোর শরীরে কাজ কি কাৰ্য্য জীবনে । হেন নারী মরে যার জীয়ে অকারণে । বাসাতে আছয়ে মোর শিশু পক্ষগণ । কেমনে করিব তার পোষণ পালন | মায়ের বিলম্বে তারা চাহে এক দিঠে । দুৰ্গতি বালক তারা শাখা নাহি উঠে । এইরূপে কান্দে পক্ষ নানা পরকারে । দুষ্ট ব্যাধে মারিল বিন্ধিয়া ধম্ শরে । এইরূপ সকল অনিত্য করি জান । বুঝিয়া বিচার করি চিত্তে অনুমান ॥ এতেক বচন বলি যম অধিকারী। অন্তরীক্ষ হঞা তিহো গেলা নিজ পুরী ॥ মন্ত্ৰিগণে নারীগণে করিয়া বিচার । রাজার শরীর লয়্যা করিল সৎকার। ঐকৃষ্ণ-প্রেমস্তরদিণী ২৭৯ জীব কার শত্রু মিত্র নহে ভিন্ন পর । সৰ্ব্বত্র সমান জীব অজর অমর। শুনহ জননী মুত শুন বন্ধুগণ। তত্ত্বে চিত্ত ধরি শোক কর নিবারণ ॥ পুত্রের বচন শুনি দৈত্যমাতা দিতি। শোক পরিহরি কৈল তত্ত্বে অবগতি। হিরণ্যকশিপু কৈল চিত্তে অম্বুমান । অজর অমর হৈব মহাবলবান ॥ জগতে দুর্জয় হৈব ত্রিভুবন-রাজা। আমা বিনে জগতে নহিব কার পূজা৷ সংকল্প করিয়া এই মহাদৈত্যেশ্বর। তপ করিবারে গেলা বনের ভিতর ॥ মন্দরপর্বতগুহা পরবেশ করি। নিরাহার নিরালম্ব উদ্ধে বাহু ধরি। বামপদ অঙ্গুলী পরশি ক্ষিতিতল। উৰ্দ্ধ নয়নে তপ করে নিরস্তর। হিরণ্যকশিপু তপ করে এই মনে। ব্ৰহ্মরন্ধ ফুটিয়া উঠিল হুতাশনে। তিন লোক দহে যেন প্রলয় অনল । নদ নদী তরু গিরি ক্ষুভিত সাগর। সপ্তদ্বীপ সহিতে কপিল ভূমিতল । খসিয়া পড়িল সব নক্ষত্র মণ্ডল । দশ দিগ জলিল কাf ল ত্ৰিভূবন । তয়ে দেব নৈল গিয়া ব্ৰহ্মার শরণ। নিবেদিল দেবগণে ব্ৰহ্মার চরণে । ত্ৰৈলোক্য দছিল দৈত্য তপ-হুতাশনে ॥ যাবৎ সকল লোক নাশ নাহি যায়। তীবৎ রাখিতে লোকে করহ উপায়। কি কব চরণে গোসাঞি সংকল্প তাহার । তিন লোক অগোচর নাহিক তোমার। তমু আমি-সব করি চরণে গোচর । বিচার করিয়া পাছে বুঝহ সকল। তপ অত্নভাবে ব্ৰহ্মা জগৎ স্বজিল । লতার উপরে সত্যলোকে বাস কৈল । আপনে ঈশ্বর হয়্যা করে ঠাকুরাল ॥ চৌদ্দ ভুবনে যার এক অধিকার ॥ ততকাল ধরি তপ করিব নিশ্চয় । যতকালে ব্ৰহ্মপদ মোর সিদ্ধ হয় । আনে আন করিৰ স্থাপিব আন ধৰ্ম্ম । প্রলয়েহ নহে যেন মোর ভঙ্গ মৰ্ম্ম । ( ১) ( ১ ) "প্রলয় কালেও যেন নহে আজ্ঞাতঙ্গ।”—পাঠাতা।