প্তিঞ্জীব অধ্যায়। బీ অসিদ্ধিকে তুল্য জ্ঞান করিতে হইবে, এই সমত্বজ্ঞানই যোগ । এই কথা, জ্ঞানবাদী শঙ্করাচাৰ্য্য যেরূপ বুঝাইয়াছেন, আমাদের মত অজ্ঞানীদিগের সেরূপ বুঝায় বিশেষ লাভ নাই। র্তাহার মত এই যে জ্ঞানপ্রাপ্তিই কৰ্ম্মের সিদ্ধি । তাই তিনি বলেন, যে “সত্বশুদ্ধিজা জ্ঞানপ্রাপ্তিলক্ষণ সিদ্ধিঃ ” এবং “তদ্বিপর্য্যয়জ অসিদ্ধিঃ ” শ্ৰীধর ঠাকুরও এখানে শঙ্করাচার্য্যের অনুবর্তী। তিনি বলেন, “কৰ্ম্মফলস্ত জ্ঞানস্ত সিদ্ধ্যসিদ্ধ্যোঃ” ইত্যাদি । এখন জ্ঞান, কৰ্ম্মের ফল কি না, সে বিচারের প্রয়োজন নাই। স্থানান্তরে সে বিচারে প্রবৃত্ত হইতে হইবে। আপাতত:, যে কথাটা উপস্থিত, তাহার সোজা অর্থ বুঝিতে পারিলে আমাদিগের পরম লাভ হইবে । টীকাকার মধুসুদন সরস্বতী সেই সোজা অর্থ বুঝাইয়াছেন। তিনি বলেন, “সিদ্ধ্যসিদ্ধ্যোঃ সমেীভূত্বেতি ফলসিদ্ধে হৰ্ষং ফলাসিদ্ধৌ চ বিষাদং ত্যক্তা” ইত্যাদি। ফলসিদ্ধিতে হর্ষত্যাগ, এবং ফলের অসিদ্ধিতে বিষাদ ত্যাগ, ইহাই সিদ্ধি অসিদ্ধিতে সমত্বজ্ঞান • সাধারণ পাঠকের ইহাই সঙ্গত অর্থ বলিয়া বোধ হইবে । যে নিষ্কাম, ফলকামনা করে না, তাহার ফলসিদ্ধিতে হর্ষ হইতে পারে না, এবং অসিদ্ধিতে বিষাদ জন্মিতে পারে না । যতদিন সে ফলসিদ্ধিতে আনন্দ লাভ করে, ততদিন বুঝিতে হইবে যে সে ফলকামনা করে—কেন না ফলকামনা না করিলে ফলসিদ্ধিতে হর্ষলাভ করিবে কেন । কৰ্ম্মচারী নিষ্কাম হইলে, তাহার ফলসিদ্ধিতে হর্ষ নাই, বা অসিদ্ধিতে দুঃখ নাই। তাহার পক্ষে অসিদ্ধি ও সিদ্ধি সমান। এই সমত্বজ্ঞানই যোগ। তাদৃশ যোগস্থ হইয়া কৰ্ম্ম কর, ইহাই প্রথম বিধি ।
পাতা:শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।