( ७ ) "ভক্তিরত্নীকর” ও “নরোত্তম-বিলাসের’ গ্রন্থকার নরহরি ভক্তিরত্নাকর-গ্রন্থে স্বীয় পরিচয় প্রদান-স্থলে মুর্শিদাবাদের অন্তর্গত রেঞাপুর-গ্রামনিবালী স্বীয় পিতৃদেব জগন্নাথকে বিশ্বনাথ চক্রবর্তী মহাশয়ের মন্ত্রশিষ্ণু বলিয়। উল্লেখ করিয়াছেন। "শ্ৰীকৃষ্ণভাৰনামৃত” গ্রন্থের টীকাকায়—শ্ৰীকৃষ্ণদেব সাৰ্ব্বভৌম মহাশয়ও শ্রীল বিশ্বনাথ চক্ৰবৰ্ত্তী মহাশয়ের মন্ত্রশিষ্য বলিয়া প্রসিদ্ধ। অল্পকাল-মধ্যেই চক্ৰবৰ্ত্তী মহাশয় পুনরায় শ্ৰীবৃন্দাবনে প্রভাগমন করেন । তথায় স্ত্রীরাধাকুণ্ড-তীরে তিনি স্থায়িভাবেই অবস্থান করিতে থাকেন। ঐ সময়ের একটা বিশেষ ঘটনার কথা তিনি স্বীয় “মন্ত্রার্থ-দীপিকা"য়ু উল্লেখ করিয়াছেন। কামগার স্ত্রীর অর্থ-পৰ্য্যালোচনা করিবার সময়ে তিনি শ্রীচৈভক্ষচরিতামৃতের— “কাম-গায়ত্রী মন্ত্ররূপ, হয় কৃষ্ণের স্বরূপ, সাৰ্দ্ধ চব্বিশ অক্ষর তার হয় । সে অক্ষর চন্দ্রীহয় কুষ্ণে করি উদয় ত্রিজগৎ কৈল কামময় ॥” এই পষ্ঠটার প্রমাণ কামগায়ত্রী যে কিরূপে চতুৰ্ব্বিংশ অক্ষয় এবং অন্ধক্ষরে গঠিত, তাগ বুঝিতে পারেন না। কি করিয়া যে অৰ্দ্ধক্ষরের অস্তিত্ব সম্ভব হইতে পারে, তাহা তিনি বুঝিতে পারেন না। ব্যাকরণ পুরাণ তন্ত্র নাট্য অলঙ্কারাদি শাস্ত্র বিশেষরূপে অনুসন্ধান করিয়াও তিনি উহাতে অৰ্দ্ধক্ষরের উল্লেখ দেখিতে পাইলেন না। পরন্তু ঐ সকল শাস্ত্রেই স্বর-ব্যঞ্জন-ভেদে পঞ্চাশং অক্ষরের উল্লেখ আছে। ঐল । জীব-গোস্বামীর শ্ৰীহরিনামামৃতব্যাকরণের সংজ্ঞাপদেও স্বরব্যঞ্জনাদিভেদে পঞ্চাশ বর্ণের উল্লেখ আছে। মাতৃকান্তাসাঞ্জিতেও মাতৃকা-রূপের ধ্যানে কুত্ৰাপি অৰ্দ্ধাক্ষরের উল্লেখ দেখিতে পাইলেন না। পরস্তু বৃহন্নাদীয়-পুরাণে-শ্রীরাধিকার সহস্রনাম-স্তোত্রে শ্রবৃঙ্গাবনেশ্বরী রাধাকে পঞ্চাশদ্বারূপিণী বলিয়া বর্ণিত দেখিতে পাইলেন। তখন তিনি ভাবিলেন, কবিরাজ-গোস্বামীর কি ভ্রম হইল ? কিন্তু তাহাও ত হইবার সম্ভাবনা নাই ; কারণ তিনি ভ্রম-প্রমাদদি-দোষ রহিত সৰ্ব্বজ্ঞা যদি “খণ্ড-ত (২) কে” অৰ্দ্ধবর্ণ বলিয়া নির্দেশ করা যায় তাই, হইলে ঐল কবিরাজ গোস্বামী ক্রমভঙ্গদোষে দোষী হন। কারণ, শ্ৰীল কবিরাজ গোস্বামী বর্ণনা করিয়াছেন—
পাতা:শ্রীমাধুর্য্য-কাদম্বিনী.djvu/১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।