( سرا ) দাস কবিরাজ প্রমাণ সংগ্ৰহ করিয়াছেন, তুমি তাহা শ্রবণ কর । তদনন্তর তুমি এই গ্রন্থ দেখিয়া সকলের উপকার সাধনার্থ ইহার প্রমাণ সংগ্রহ কর।” স্বয়ং বৃষভানুননিনীে শ্রীরাধিকার এই আদেশ-বাক্য শ্রবণ করিয়া চেতনা লাভ করিয়া বিশ্বনাথ শীঘ্র উখিত হইলেন এবং হা রাধে-রাধে ! বলিয়া পুনঃ পুন: বিলাপ করিতে করিতে হৃদয়ে শ্রীরাধিকার আদেশবাণী ধারণ করিয়া তাহার পালনে যত্নবান হইলেন। অদ্ধাক্ষর-নির্ণয়-বিষয়ে শ্রীরাধিক যাহা বলিলেন, তাহাতে “যে য়-কারের পর "বি” অক্ষর আছে—সেই য়-কারই অৰ্দ্ধাক্ষর, তদ্ভিন্ন পূর্ণীক্ষর পূর্ণচন্দ্র।” শ্রীরাধিকার কৃপায় মন্ত্রার্থ গোচর হওয়ায় বিশ্বনাথ ইষ্টদেব সাক্ষাৎ করিয়া সিদ্ধদেহে নিত্যলীলার পরিকরভূক্ত হইলেন। এই সময়ে তিনি রাধাকুগুতীরে শ্ৰীগোকুলানন্দ-নামক ঐবিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তথায় অবস্থানকালে শ্ৰীবৃন্দাবনের নিত্য-নীলামাধুর্য্য অনুভব করিয়া শ্ৰীল কবিকর্ণপুর গোস্বামীর “আনন্দ-বৃন্দাবনচম্পূর” মুখবর্তনী নামী টাকা প্রকাশ করেন যথা, করাধাপ্রস্তীরকুটারবৰ্ত্তিন প্রাপ্তবাবুলাবন-চক্রবর্তন। "আনচশ বিবৃতিপ্রবর্কিন সন্তে গতিৰ্ম্মে স্বমানিবাৰ্ত্তন।" এখন হইতে প্রধান শিষ্য বলদেবই শিষ্যগণকে অধ্যাপনা করাইতেন । শ্ৰীবিশ্বনাথ অন্তদর্শায় ও অৰ্দ্ধবাহ-দশায় ভজনানন্দে অধিকাংশ কাল যাপন করেন । গৌড়ীয়-বৈষ্ণবমত-প্রতিষ্ঠা। শ্ৰীবৃন্দাবনে শ্ৰীগোস্বামিপাদগণের প্রভাব কিঞ্চিৎ লোপ পাইবার পরই স্বকীয়া-পরকীয়াবাদ লইয়া মতভেদ উপস্থিত হইল। বিশ্বনাথ শ্রবৃন্দাবনে উপস্থিত হইয়াও পশ্চিমাঞ্চলের বৈষ্ণৰগণের স্বকীয়াবাদের ভ্রম নিরসন কুরিয়া নিজ সিদ্ধান্ত-স্থাপনমানসে “রাগবত্ম-চন্দ্রিকা” “গোপীপ্রেমামৃত” প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন । কিন্তু উহাতেও সমস্ত গণ্ডগোলের মীমাংসা হয় নাই। বিরুদ্ধপক্ষীয় বৈষ্ণবগণ ১৬৪০ শকে অম্বররাজ দ্বিতীয় জয়সিংহকে বুঝাইলেন যে, জীগোবিনোর সহিত শ্রীরাধিকার পূজা এাস্ত্রসন্মত নহে, কারণ ভাগবত বা বিষ্ণুপুরাণে হীরাধিকার নাম দৃষ্ট হয় না। রাজা অগত্য শ্ৰীমতী রাধিকার মূৰ্ত্তি পৃথক গৃহে রাথিয় তাহার স্বতন্ত্র পূজার ব্যবস্থা করিলেন । প্রবৃন্দাবনের
পাতা:শ্রীমাধুর্য্য-কাদম্বিনী.djvu/১২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।