পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१९, ४) রাজমালা । দ্বিতী। সম্বন্ধ স্থাপনাবধি পর্বর্বত্য সমাজে বিশেষ সন্মান লাভ করিয়াছিল এবং সেই সম্মান অদ্যাপি অক্ষুণ্ণ রহিয়াছে। এই হাজরা রসাঙ্গমর্দন নারায়ণের সহকারীরূপে চট্টগ্রামের যুদ্ধে উপস্থিত থাকিবার প্রমাণ আছে। হৈতন খা —(২৪ পৃঃ—২৭ পংক্তি )। ইনি গৌড়েশ্বর হোসেনশাহের সেনাপতি। হোসেন, ধন্যমাণিক্যের সঙ্গে প্রথম যুদ্ধে পরাস্ত হইবার পর, দ্বিতীয়বার ত্রিপুরা আক্রমণের নিমিত্ত হৈতন থা ও করা থাকে এক শত হস্তী, পঞ্চ সহস্ৰ, অশ্বারোহী এবং এক লক্ষ পদাতিক সৈন্যসহ প্রেরণ করিয়াছিলেন। এবারও ত্রিপুর সেনাপতির কৌশলে, হৈতনের প্রবলবাহিনীর অধিকাংশ গোমতী স্রোতে ডুবিয়া জীবন বিসর্জন করে এবং হতাবশিষ্ট অল্প সংখ্যক সৈন্যসহ তিনি পলায়ন করিতে বাধ্য হন । হোপকলাউ —(৩১ পৃঃ–২২ পংক্তি ) ৷ ইনি ধন্যমণিক্যের জামাত । রাজ আজ্ঞায় কুকি-প্রদেশে সর্ণ খনির অনুসন্ধানে গিয়াছিলেন। কুকিগণ মনে করিল, সুবর্ণের সন্ধান পাইলে, নিশ্চয়ই ত্রিপুরেশ্বর এখানে একটী থানা বসাইবেন এবং তদরুণ তাহাদিগকে নানাবিধ অসুবিধা ভোগ ও স্বর্ণের খনিতে কার্য্য করিতে হইবে। এজন্য তাহারা হোপকলাউকে সাদরে গ্রহণ করতঃ অতিরিক্ত মদ্যদ্বার বিহবল করিয়া, তদবস্থায় নিহত করিয়ছিল । হোসেন শাহ —(২২ পৃঃ—২০ পংক্তি)। বঙ্গেশ্বর মজঃফর শাহ অত্যাচার বলিয়া অমাত্যবর্গ কর্তৃক নিহত হইবার পর, হোসেন শাহ রাজপদে প্রতিষ্ঠিত হন । ইনি মজঃফরের মন্ত্রী ছিলেন। ইসলাম ধৰ্ম্ম প্রবর্তক হজরও মহম্মদের বংশে ইহার জন্ম হয় । তিনি নিতান্ত দুরবস্থায় পতিত হইয়া এ দেশে আগমন করেন, এবং রাজ সরকারে সামান্য কাৰ্য্যে নিযুক্ত হইয়া স্বয় প্রতিভাবলে ক্রমোন্নতি লাভ করত: বঙ্গের সিংহাসন অধিকার করিয়াছিলেন। ইনি কামতারপুর রাজ্য জয় করিয়া স্বীয় অধিকারভুক্ত করেন। ত্রিপুরেশ্বর ধন্যমণিক্যের সহিত ক্রমান্বয়ে দুইবার যুদ্ধ পরাভূত হইয়া, তৃতীয় বারের যুদ্ধে ত্রিপুর রাজ্যের সামান্য অংশ হস্তগত করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহা তাধিককাল স্বীয় বশে রাখিতে সমর্থ হন নাই। হোসেন সদাশয় এবং বঙ্গসাহিত্যের পোষক ছিলেন । ইহার শাসন ১৪৯৪ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৫২০ খৃষ্টাব্দ পৰ্য্যন্ত ২৭ বৎসর কল স্থায়ী ছিল ।