পাতা:শ্রীরায় রামানন্দ - রসিকমোহন বিদ্যাভূষণ.pdf/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ । o ty সাত্ত্বিক পুরাণ-সমুদ্রমন্থন করিয়া বৈষ্ণবগণ শ্ৰীকৃষ্ণকেই আরাধ্যতত্ত্ব বলিয়া জানিতে পারিয়াছেন। বৈষ্ণবগণ নিষ্ঠাসহকারে শ্ৰীকৃষ্ণের ভজন করেন । কিন্তু অন্য দেবতার অবজ্ঞা করা নরকজনক বলিয়া বৈষ্ণবশাস্ত্ৰে কীৰ্ত্তিত হইয়াছে। সতী রমণী যেমন ভাসুর, শ্বশুর, শ্বাশুড়ী ও মাতা প্রভৃতির প্রতি অবজ্ঞা না করিরা প্ৰত্যুত তাহদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান ও যত্ন প্ৰদৰ্শন করিয়া থাকেন, কিন্তু পতিকেই যেমন একমাত্ৰ প্ৰাণেশ্বব জানিয়া তাহার শ্ৰীচরণে আত্মসমৰ্পণ করেন ; বৈষ্ণবগণ ও সেই প্ৰকাব অন্যান্য দেবতার প্রতি সম্মান প্ৰদৰ্শন করিয়া থাকেন, কিন্তু তেঁাহারা শ্ৰীকৃষ্ণব্ৰত। শ্ৰীকৃষ্ণই তঁহাদের একমাত্র আরাধ্য । এইরূপ ভাবকে কেহ কেহ উদারতার অভাব বা ধৰ্ম্মমতের সঙ্কীর্ণতা মনে করিতে পারেন। } কিন্তু বলা বাহুল্য শ্ৰী গুরুর কৃপায় ভজনের পথে অগ্রসর হইলে তাহদের এই ধারণা বিনা উপদেশেই অপনোদিত ও নিরাকৃত হইয়া যাইবে । তাহারা তখন বুঝিতে পারিবেন, ভজন চাহে-নিষ্ঠা । নিষ্ঠায় মনোবৃত্তিসমূহ কেন্দ্রাভিগামী হইতে থাকে। এই অবস্থায় অনন্ত বাপ্তিময় স্বাষ্পের ন্যায় মনোবৃত্তির তরলতা ক্রমেই ঘনীভূত হইতে আরব্ধ হয়, চিন্তু তখন চিন্দঘনানন্দ আনন্দমূৰ্ত্তি শ্ৰীকৃষ্ণের অন্বেষণে ব্যাকুল হয়,- প্ৰাণেব প্রাণ হৃদয়বল্লভকে লাভ করিবার জন্য তখন তাদৃশ ভক্ত সকলের চরণমূলে মাথা কুটিয়া নিজের প্রাণবল্লভ-লাভের উপায় জিজ্ঞাসা করেন, সকলের শুভাশীৰ্বাদের জয়মাল্য শিরে লইয়া কৃষ্ণান্বেষণে ধাবিত হয়েন । ক্রমবিকাশের নিয়মানুসারে চিত্তবৃত্তি যখন অধিকতর প্রবল বেগে কেন্দ্ৰাভিমুখী হইতে থাকে, সাধক তখন বহির্দৃষ্টির সীমা অতিক্ৰম করিয়া ভেদজ্ঞানের অনন্ত বিভিন্নতার দিকে দৃকপাত না করিয়া বর্ষার দ্বিকুলসংপ্লবনী সাগরগামিনী তরঙ্গিণীর উন্মাদ-উধাও তরঙ্গের ন্যায় নাচিতে নাচিতে শ্ৰীকৃষ্ণসাগরে মিলিত হইবার জন্য ব্যাকুলিত হইয়া পড়েন, সুতরাং অপর দেবতাদের মধ্যে কে কোথায় আছেন না আছেন, তাহার অনুসন্ধান । ,>8